দরিদ্র মানুষকে বাড়ি দেওয়া নিয়ে দুর্নীতি, তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন অভিনেতা দেব

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনা বা দরিদ্র মানুষকে বাড়ি দেওয়ার প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে এখন তোলপাড় হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতি। অভিযোগ উঠেছে, আবাস যোজনার বাড়ি বরাদ্দ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। গরিবরা বাড়ি পাননি। বাড়ি দেওয়া হয়েছে শাসক দল তৃণমূলের বহু নেতা–কর্মীদের। আর এ বিষয় নিয়ে সরব হয়েছেন অভিনেতা ও শাসক দল তৃণমূলের সংসদ সদস্য দেব।

গতকাল সোমবার দেব পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের দাসপুরে তৃণমূলের এক সভায় বলেছেন, ‘যাঁদের মাথায় ছাদ নেই, তাঁরা পাচ্ছেন না বাড়ি। যাঁদের পাকা বাড়ি আছে, তাঁরা পাচ্ছেন বাড়ি। যেটা ভুল, সেটা ভুলই। আমার দল করুক কিংবা অন্যদল করুক, সেটা ভুলই। যাঁদের প্রাপ্য এই বাড়ি এবং যাঁরা সত্যিই গরিব, তাঁদেরই দেওয়া উচিত এই বাড়ি।’

দেবের এই মন্তব্যের পর ক্ষুব্ধ তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, দেবকে মনে রাখতে হবে তিনি দলের সংসদ সদস্য। আবাস প্রকল্পে স্বচ্ছতার জন্য দল এবং রাজ্য সরকার যা করার তা–ই করেছে। তাই কোনো মন্তব্য করার আগে তাঁকে খেয়াল রাখতে হবে, আমরা যেন বিজেপির ফাঁদে পা না দিই।’

দেবের মন্তব্যে এটা স্পস্ট হয়েছে, তৃণমূল নেতারা আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগকে মেনে নিলেন।

রাজ্যজুড়ে আবাস যোজনার দুর্নীতি ফাঁস হয়ে পড়ার পর অনেকেই ফিরিয়ে দিচ্ছেন তাঁদের বরাদ্দকৃত বাড়ি। এভাবে নিজের নামে বরাদ্দকৃত বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন জলপাইগুড়ির মাল বাজারের মহম্মদ মানিক নামের এক যুবক। গতকাল সোমবার মালবাজারের মহম্মদ মানিক তাঁর নামে বরাদ্দকৃত বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে বলেছেন, তাঁর বাড়ি রয়েছে। নতুন করে আর তাঁর বাড়ির প্রয়োজন নেই।

গত বছরের ৫ অক্টোবর দুর্গাপূজার দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জনের সময় হঠাৎ মাল নদীতে হড়কা বান দেখা দিলে বহু মানুষ ভেসে যায়। সেই জলোচ্ছ্বাসে মারা যান আটজন। আহত হন ১৩ জন। মানিক সেদিন নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে উদ্ধার করেছিল বহু মানুষকে। আর এই অবদানের জন্য তাঁকে বাড়ি বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু মানিক নিলেন না আবাস যোজনার বাড়ি।

এই নিয়ে চলমান তীব্র আন্দোলনের মুখে হাওড়ার শ্যামপুরের তৃণমূলের বিধায়ক কালীপদ মণ্ডল শনিবার প্রকাশ্যেই বলেছেন, আবাস যোজনায় এবার বহু গরিব বাড়ি পাননি। বাড়ি পেয়েছেন তিনতলার পাকা বাড়ির মালিকরাও। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও সংসদ সদস্য সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘এবার সব চোরদের ধরা হবে।’