নীতীশ জোট ছাড়ার পর বিহারে ঢুকলেন রাহুল

ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীফাইল ছবি

ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা যখন শুরু হয়েছিল, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার তখন ছিলেন বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক। যাত্রা বিহারে থাকাকালে জেডিইউ নেতা ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাতে অংশ নেবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনাও চলছিল। রাতারাতি পালাবদল ঘটে গেছে। নীতীশ কুমার মুখ্যমন্ত্রীই আছেন। কিন্তু এখন তিনি আর ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক নন।

এ অবস্থায় ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা আজ সোমবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিহার রাজ্যে ঢুকেছে। এ মুহূর্তের জল্পনা, বিজেপিশাসিত আসামে যাত্রাকে যেভাবে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে, নীতীশের বিহারেও তা হয় কি না।

আজ সোমবার সকালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিহারের কিষানগঞ্জে প্রবেশ করে রাহুলের যাত্রা। রাজ্যের ৪০টি লোকসভা আসনের মধ্যে একমাত্র এই কিষানগঞ্জই গত ভোটে কংগ্রেস দখল করেছিল। ২০১৯ সালে ৩৯টি আসন জিতেছিল বিজেপি-জেডিইউ-এলজেপি। তারই পুনরাবৃত্তি করতে বিজেপি কাছে টেনেছে নীতীশ কুমারকে। রাতারাতি রাজনৈতিক মেরুকরণ বদলে যাওয়ায় আগামী তিন দিন কিষানগঞ্জ, কাটিহার, পূর্ণিয়ায় রাহুল কেমন অভ্যর্থনা পান, তা নিয়ে আপাতত জল্পনা তুঙ্গে।

আজ সকালে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার সোনাপুর থেকে যাত্রা শুরু করে রাহুলের বাস বেলা ১১টা নাগাদ বিহারের কিষানগঞ্জে পৌঁছায়। এই এলাকা মুসলমান–অধ্যুষিত। আজ কিষানগঞ্জে কাটিয়ে কাল মঙ্গলবার রাহুল যাবেন কাটিহার, পরশু বুধবার পূর্ণিয়ায়। এই দুই জেলা আবার জেডিইউর শক্ত ঘাঁটি। ৩১ জানুয়ারি রাহুল বিহার ছেড়ে আবার প্রবেশ করবেন পশ্চিমবঙ্গে। তারপর ঝাড়খন্ড হয়ে আবার যাবেন বিহারে।

কিষানগঞ্জে রাহুলের ভাষণে বিজেপির নিন্দা ছিল। হিংসা ও ঘৃণার বিপরীত রাজনীতিই যে তিনি করতে চান, ভালোবাসার দোকান খোলাই যে তাঁর এই যাত্রার উদ্দেশ্য, সে কথাই তিনি বারবার বলেন। তাঁর ভাষণে উঠে আসে বেকারত্ব, আর্থিক ও সামাজিক বৈষম্য দূর করার কথা।

গত লোকসভার নির্বাচনের পর এটাই রাহুলের প্রথম বিহার সফর। এই যাত্রায় বিজেপিশাসিত আসামে তাঁর অভিজ্ঞতা মোটেই ভালো ছিল না। রাজ্য সরকার প্রতি পদে যাত্রায় বাধা সৃষ্টি করেছে। পুলিশের সঙ্গে মৃদু সংঘর্ষও হয়েছে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের। রাহুলের বিরুদ্ধে করা হয়েছে অভিযোগ।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, লোকসভা ভোটের পর রাহুলকে গ্রেপ্তার করা হবে। রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যাওয়া বিহারের পাশাপাশি হিন্দি বলয়ের অন্য বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোয় এই যাত্রাকে বিরোধ ও বাধার মুখে পড়তে হয় কি না, সেটাই হয়ে উঠেছে মূল দ্রষ্টব্য।

কংগ্রেস অবশ্য বলছে, নীতীশ কুমারের রংবদল ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কাছে সমস্যার কারণ হবে না। বরং বিচারধারার লড়াই তীব্রতর হবে। প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা পূর্ণিয়ার জনসভায় আরজেডি ও সিপিআই (এমএল) শামিল হতে অনুরোধ জানিয়েছেন।