মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত নিয়ে তিন আলোচনা সভা–ই বাতিল করল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়

মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক সংঘাত নিয়ে আয়োজিত তিনটি পৃথক আলোচনা সভা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিল দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)। তাতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ভারতে নিযুক্ত ইরান, ফিলিস্তিন ও লেবাননের রাষ্ট্রদূতদের।

কেন তিন আলোচনা সভা বাতিল করা হলো, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে কিছু জানাতে অস্বীকার করেছে। ইরান, ফিলিস্তিন ও লেবাননের রাষ্ট্রদূতেরাও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

আলোচনা সভার আয়োজক ছিল জেএনইউয়ের ‘সেন্টার ফর ওয়েস্ট এশিয়ান স্টাডিজ’। তিনটি পৃথক দিনে তিন দেশের রাষ্ট্রদূতদের আসার কথা ছিল। গত বুধবার ছিল প্রথম আলোচনা সভা। আসার কথা ছিল ইরানের রাষ্ট্রদূত ইরাজ ইলাহির। পশ্চিম এশিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাবলি ইরান কী চোখ দেখছে, সেটাই ছিল আলোচনার বিষয়বস্তু। সময় নির্ধারিত ছিল বেলা ১১টা। কিন্তু সকাল আটটাতেই আলোচনা সভার সমন্বয়ক সীমা বৈদ্য ইরানি রাষ্ট্রদূতকে ই–মেইল করে জানিয়ে দেন, অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।

সেই একই বার্তা পাঠানো হয় ফিলিস্তিন ও লেবাননের রাষ্ট্রদূতদেরও। ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত আদনান আবু আল হাইজার আসার কথা ছিল ৭ নভেম্বর। লেবাননের আলোচনা সভার সময়সূচি ছিল ১৪ নভেম্বর। সেখানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল, সে দেশের রাষ্ট্রদূত রাবিই নার্সের। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ইরান ও লেবানন দূতাবাসের সূত্র বলেছে, কী কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাঁরা জানেন না।

আলোচনা সভার সমন্বয়ক সীমা বৈদ্যও কারণ জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। যদিও জেএনইউ সূত্রের বরাতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ‘স্কুল অব ইন্টারন্যাশন্যাল স্টাডিজ’–এর (সিস) শীর্ষ ফ্যাকাল্টি সদস্যরা আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাঁদের শঙ্কা, আলোচনা সভার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ হতে পারত। আজকের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তেমন বিক্ষোভ অভিপ্রেত নয়। সেন্টার ফর ওয়েস্ট এশিয়ান স্টাডিজ ‘সিস’–এরই অধীন।

জেএনইউতে শাসক দলের অপছন্দের আলোচনা সভা এর আগেও একাধিকবার বাতিল করা হয়েছে। ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর বাতিল করা হয়েছিল জম্মু–কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে একটি সেমিনার। তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। জেএনইউয়ের তৎকালীন উপাচার্য জগদেশ কুমার অনুষ্ঠান বাতিলের নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, আলোচনা সভার বিষয়বস্তু ছিল ‘আপত্তিজনক ও প্ররোচনামূলক’।