পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় দফার লোকসভা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাটের একটি ভোটকেন্দ্রে নারী ভোটারদের দীর্ঘ সারি। দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতছবি: এএনআই

দু–একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল সাতটায় শুরু হয় ভোট গ্রহণ, আর শেষ হয় সন্ধ্যা ছয়টায়।

শুক্রবার সকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট কেন্দ্রে বিজেপির এক কর্মী তৃণমূলের সমর্থকদের হাতে মার খেয়েছেন। তাঁকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দুপুরে দার্জিলিং আসনের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা ফাঁসিদেওয়া ও টিকিয়াপাড়া বুথ পরিদর্শনে গেলে তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা সেখানে বিক্ষোভ করেন। তিনি এর প্রতিবাদ না করে বলেন, মানুষ এবার তাঁদের পক্ষেই ভোট দিচ্ছে।

বালুরঘাট আসনের বিজেপির প্রার্থী ও বিজেপির রাজ্য কমিটির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ভোটকেন্দ্র গেলে সেখানে তৃণমূলের সমর্থকেরা ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি দেন। গঙ্গারামপুর ভোটকেন্দ্রে গেলে সেখানেও তৃণমূলের সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেন।

দার্জিলিংয়ের চোপড়া ভোটকেন্দ্রে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছেন বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের একদল সমর্থক ৩০ থেকে ৪০টি ভোটকেন্দ্রে সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে দেননি।

রায়গঞ্জের গোয়াল পোখরা এলাকায় কংগ্রেস প্রার্থী আলী ইমরাজ রামজকে দেখে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন তৃণমূলের সমর্থকেরা। এ সময় কংগ্রেস প্রার্থী আলী ইমরাজ বলেন, ওরা তো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ‘জয় বাংলা’ স্লোগান চুরি করে স্লোগান দিচ্ছে। চুরি তো ওদের নিত্যদিনের সঙ্গী।

রায়গঞ্জের একটি বুথে বিজেপির এজেন্টকে ঢুকতে দেননি তৃণমূলের সমর্থকেরা। পাতিরামে বিজেপির এজেন্টকে মারধর করেছেন তাঁরা। বালুরঘাট কেন্দ্রে এক বিজেপির নারী কর্মীকে চড় মারেন তৃণমূলের এক নারী ভোটার।

১৯ এপ্রিল ভারতের লোকসভার প্রথম দফার নির্বাচন হয়। শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বিতীয় দফার ভোট। এই দ্বিতীয় দফায় পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফার মতো তিনটি আসনে ভোট নেওয়া হয়েছে। আসন তিনটি হলো দার্জিলিং, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট এবং উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ।

দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে কেন্দ্রগুলো। নিয়োগ করা হয়েছে ২৭২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যসহ ১২ হাজার ৯৫৩ রাজ্য পুলিশ। এবার প্রতিটি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমেও নিয়োগ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য। এর মধ্যে দার্জিলিংয়ে ৮৮ কোম্পানি, রায়গঞ্জে ১১১ কোম্পানি এবং বালুরঘাটে ৭৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য।

শুক্রবারের নির্বাচনে তিনটি আসনে লড়েছেন ৪৭ জন প্রার্থী। এই তিন আসনে লড়ছেন ৪৭ জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এর মধ্যে ১৪ জন দার্জিলিংয়ে, ২০ জন রায়গঞ্জে এবং বালুরঘাটে লড়ছেন ১৩ জন প্রার্থী। তিন আসনের ভোটার ৫১ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৫ জন।

২০১৯ সালের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে এ তিন আসনেই বিজেপির প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিল। দার্জিলিংয়ে রাজু বিস্তা, বালুরঘাটে সুকান্ত মজুমদার এবং রায়গঞ্জে দেবশ্রী চৌধুরী। দেবশ্রী চৌধুরী কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। এবার দেবশ্রীকে ওই আসনে মনোনয়ন না দিয়ে তাঁকে কলকাতা দক্ষিণ আসনের প্রার্থী করেছে বিজেপি। রায়গঞ্জে নতুন প্রার্থী কার্তিক পালকে প্রার্থী করেছে বিজেপি।

অপর দিকে বালুরঘাটে বিপ্লব মিত্র, রায়গঞ্জে কৃষ্ণ কল্যাণী এবং দার্জিলিংয়ে গোপাল লামাকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।