নির্বাচিত সভাপতিকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে না

রাহুল গান্ধী
ফাইল ছবি

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী জানিয়ে দিলেন, মল্লিকার্জুন খাড়গে বা শশী থারুর—যিনিই সভাপতি নির্বাচিত হোন না কেন, দল পরিচালনার পূর্ণ স্বাধীনতা তাঁর থাকবে। নিজের বিচারবুদ্ধি মতো দল নিয়ে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তাঁর থাকবে।

‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ চলাকালে কর্ণাটক রাজ্যের তুরুভেকেরেতে গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে রাহুল এই মন্তব্য করেন। সভাপতি নির্বাচন নিয়ে গান্ধী পরিবারের কোনো সদস্যের এটিই প্রথম সরাসরি মন্তব্য। এত দিন ধরে সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে দলনেত্রী সোনিয়া বা তাঁর পুত্র-কন্যা কাউকে কিছু বলতে শোনা যায়নি।

পর্দার আড়াল থেকে নতুন সভাপতিকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে কি না, সোনিয়া বা রাহুল নিয়ন্ত্রক হবেন কি না, সরাসরি সেই প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রাহুল বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু যে দুজন প্রার্থী হয়েছেন, তাঁরা প্রতিষ্ঠিত। তাঁদের নিজস্ব ভাবনাচিন্তা আছে। দল ও সমাজে তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট। দুজনই প্রবল বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষ। যিনিই নির্বাচিত হোন, তিনি নিয়ন্ত্রিত হবেন না। সত্যি বলতে কি, আমি মনে করি, এই ধরনের মন্তব্য তাঁদের প্রতি অসম্মানজনক।’

দীর্ঘ ২২ বছর পর কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচন হতে চলেছে এবার। ১৭ অক্টোবর সেই নির্বাচন। ফলাফল ঘোষিত হবে ১৯ অক্টোবর। গতকাল ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। শেষ মুহূর্তে থারুর লড়াই থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে একটা জল্পনা ছিল। কিন্তু কেরালার সংসদ সদস্য সেই সম্ভাবনা নাকচ করে জানিয়েছেন, পিছিয়ে যাবেন বলে তিনি নির্বাচনে দাঁড়াননি। অতএব প্রতিদ্বন্দ্বিতা দ্বিমুখী।

মল্লিকার্জুন খাড়গে
ফাইল ছবি

সংবাদ সম্মেলনে রাহুলকে নানা প্রশ্ন করা হয়। একজন প্রশ্ন করেন, কর্ণাটকে দলের সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু গোষ্ঠী কোন্দলও রয়েছে, তা দলের ক্ষতি করতে পারে। জবাবে রাহুল বলেন, ‘কংগ্রেস স্বৈরাচারী দল নয়। আমাদের দল সংলাপে বিশ্বাসী। ভিন্নমতকে সম্মান করে। কিন্তু তার পাশাপাশি আমরা সবাই জানি, জিততে গেলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক জোট হয়ে কাজ করতে হবে।’

শশী থারুর।
ফাইল ছবি

কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত এই ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’কে কটাক্ষ করে বিজেপি বলছে, যে দল দেশভাগের জন্য দায়ী, তারা এখন ভারত জোড়োর স্লোগান দিচ্ছে। এই যাত্রা কী কারণে ও কেন, সেই প্রশ্ন করা হলে রাহুল বলেন, দেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে আরএসএসের কোনো ভূমিকা ছিল না। এটা ইতিহাসস্বীকৃত সত্য। বিজেপি সারা দেশে ঘৃণা ছড়াচ্ছে। বিভাজনের রাজনীতি চালাচ্ছে। এতে দেশ দুর্বল হচ্ছে। সেই বিপদ থেকে দেশকে বাঁচাতেই এই যাত্রা।

রাহুল সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, এই যাত্রা তাঁর একার নয়। লাখ লাখ মানুষ এই যাত্রার সঙ্গী। নিষিদ্ধ ‘পিএফআই’–সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যের সমষ্টি এই ভারত। ইউনিয়ন অব স্টেটস। এর অর্থ সব ভাষা, ঐতিহ্য ও মতের গুরুত্ব সমান। সেটাই আমাদের দেশের প্রকৃতি। ঘৃণা ছড়ানো, হিংসায় মদদ দেওয়া জাতিবিরোধী কাজ। কংগ্রেস ঘৃণার বিরুদ্ধে।’

বিজেপির সমালোচনা করে রাহুল বলেন, তারা যে ধরনের রাজনীতি করে চলেছে, যেভাবে বিভাজনের সৃষ্টি করছে, মানুষ তাতে ক্লান্ত। মূল্যবৃদ্ধির ছোবল, বেকারত্বের তীব্রতায় মানুষ অসহায়। জনতা পরিত্রাণ চায়।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন