ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসিতে জ্ঞানবাপী মসজিদ
ফাইল ছবি: রয়টার্স

উপাসনাস্থল আইন নিয়ে অবস্থান জানাতে কেন্দ্রীয় সরকারকে (বিজেপি) নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে আইন সম্পর্কে সরকারের মনোভাব নিশ্চিত করে জানাতে হবে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি জে বি পর্দিওয়ালার বেঞ্চ আজ সোমবার সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে এই নির্দেশ দেন। আগামী বছরের জানুয়ারিতে উপাসনাস্থল আইন চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা মামলার শুনানি শুরু হবে।

বাবরি মসজিদ–রাম জন্মভূমি বিতর্ক যখন তুঙ্গে, সেই সময় ১৯৯১ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার এই আইন প্রণয়ন করেছিল। তাতে বলা হয়েছিল, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট দেশের উপাসনাস্থলগুলো যেমন ছিল, তেমনই থাকবে। কাঠামো বা চরিত্র বদল করা যাবে না। ওই আইনের আওতায় শুধু অযোধ্যার বাবরি মসজিদ–রাম জন্মভূমির বিতর্কিত কাঠামোকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। কারণ, বিষয়টি তখন সুপ্রিম কোর্টে বিবেচনাধীন ছিল। তখন বলা হয়েছিল, আইনটি জম্মু–কাশ্মীর ছাড়া দেশের সর্বত্র প্রযোজ্য হবে।

সেই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে অনেকগুলো মামলা হয়েছিল। অন্যতম মামলাকারী বিজেপি নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী আজ সুপ্রিম কোর্টকে বলেছেন, তিনি আইনটি রদ করার দাবি জানাচ্ছেন না। তিনি শুধু চাইছেন অযোধ্যার মতো বারানসির কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ও মথুরার শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমিকে ওই আইনের পরিধির বাইরে রাখা হোক।

কাশী ও মথুরায় দুই মন্দিরের লাগোয়া যথাক্রমে জ্ঞানবাপি ও শাহি ঈদগাহ মসজিদ নিয়ে ইতিমধ্যে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে আইনি লড়াই শুরু হয়েছে। অযোধ্যা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট হিন্দুদের পক্ষে রায় দেওয়ার পর উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন নিম্ন আদালতে উপাসনাস্থল আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়ের হয়। একাধিক নিম্ন আদালত এ ধরনের মামলা নিতে অস্বীকৃতিও জানায়।

জ্ঞানবাপি মসজিদে হিন্দু দেব–দেবীর পূজার্চনাসংক্রান্ত দাবিতে মামলা হলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় তা বারানসি জেলা আদালতে পাঠানোর সময় মন্তব্য করেছিলেন, উপাসনাস্থল আইনে কাঠামো ও চরিত্রের বদল করা যাবে না বলা হলেও আইনের ধারা বা উপধারা পর্যালোচনা করা যাবে না বলা হয়নি। বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের ওই মন্তব্যের পর উপাসনাস্থল আইন চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নতুন করে আরও মামলা রুজু হয়। প্রধান বিচারপতি নিযুক্তির পর ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের উপাসনাস্থল আইনসংক্রান্ত মামলায় এটাই প্রথম নির্দেশ।

নেতাজির জন্মদিনে ছুটি ঘোষণার মামলা খারিজ

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিন জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণার দাবিতে করা মামলা সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছেন। আজ প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি জে বি পর্দিওয়ালার বেঞ্চ জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে বলেন, জাতীয় ছুটি ঘোষণা করা না–করা সরকারের দায়িত্ব। আদালত এই বিচার করতে পারেন না। এ নিয়ে কোনো নির্দেশও দিতে পারেন না। প্রধান বিচারপতি আবেদনকারীকে বলেন, নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানানোর সবচেয়ে ভালো উপায় কঠোর পরিশ্রম করা। তিনি বলেন, ‘আদালতের এখতিয়ার কতখানি, তা বুঝতে হবে। আপনি নীল আকাশ পছন্দ করেন বলে আদালত আকাশ নীল রাখার নির্দেশ দিক, দাবি জানাতে পারেন না।’