কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার লড়াইয়ে যুক্ত হলেন শশী থারুর

কেরালা রাজ্য থেকে নির্বাচিত এমপি ও জ্যেষ্ঠ কংগ্রেস নেতা শশী থারুর
ছবি: এএফপি

ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি পদের লড়াইয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নাম লেখালেন দলটির জ্যেষ্ঠ নেতা শশী থারুর। প্রথম প্রার্থী হিসেবে কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তিনি। কেরালার এমপি শশী থারুরের পক্ষে তাঁর প্রতিনিধি কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মধুসূদন মিস্ত্রির কাছ থেকে ফরম সংগ্রহ করেন। এ খবর জানিয়ে বার্তা সংস্থা এএনআই আরও বলেছে, থারুর পাঁচটি মনোনয়ন ফরমের জন্য অনুরোধ করেছিলেন।

কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচনের জন্য গতকাল শনিবার শুরু হয়েছে মনোনয়ন ফরম জমাদানপ্রক্রিয়া। ৩০ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার শেষ দিন। ভোট ১৭ অক্টোবর। ফলাফল প্রকাশিত হবে আগামী ১৯ অক্টোবর। সব মহলের অনুরোধ সত্ত্বেও রাহুল গান্ধী সভাপতি না হওয়ার সিদ্ধান্তে অনড়। শুধু রাহুল গান্ধী নন, গান্ধী পরিবারের কেউ দলীয় প্রধান হতে নারাজ। তাই ১৯৯৬ সালে সীতারাম কেশরীর পর আরও একবার কংগ্রেস সভাপতি হতে যাচ্ছেন গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ।

সভাপতি পদের লড়াইয়ে শশী থারুরের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তিনি গান্ধী পরিবারের প্রতি অনুগত একজন নেতা হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া কংগ্রেসে স্থিতাবস্থা, গান্ধী পরিবারের কারও নেতৃত্ব দেওয়া এবং সর্বোপরি রাহুল গান্ধীকে যাঁরা সভাপতি দেখতে চান, তাঁরা গেহলটের পক্ষে। তবে সভাপতি পদে নির্বাচন করতে সোনিয়া গান্ধীর কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া শশী থারুর গেহলটের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

তবে দলের প্রধান পদের লড়াইটা ত্রিমুখী, চতুর্মুখী কিংবা পঞ্চমুখীও হতে পারে। কেননা, পাঞ্জাবের নেতা মনীশ তিওয়ারি ও মধ্যপ্রদেশের কমলনাথ ও দিগ্বিজয় সিংয়ের নাম দলের ভেতর আলোচনায় আছে। দুই বছর আগে সর্বক্ষেত্রে সাংগঠনিক নির্বাচনের মাধ্যমে স্থায়ী নেতা নির্বাচনের দাবিতে দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে যে ২৩ জন শীর্ষ নেতা চিঠি লিখেছিলেন, তাঁরা ‘জি-২৩’ বলে পরিচিত। অশোক গেহলট না থাকলেও শশী থারুর, মনীশ তিওয়ারি, কমলনাথ জি-২৩ গোষ্ঠীভুক্ত।

তবে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হলেও দলের বেশির ভাগ নেতা রাহুল গান্ধীকে সভাপতির দায়িত্ব নিতে বারবার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া রাহুল গান্ধী তাঁর সিদ্ধান্তেই অনড়। অশোক গেহলটসহ শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতার অনুরোধ সত্ত্বেও তাঁকে রাজি করানো যায়নি। টানা ১৯ বছর সভাপতি থাকার পর দলীয় প্রধানের দায়িত্ব রাহুল গান্ধীকে দেন সোনিয়া গান্ধী। এখন তিনি অন্তর্বর্তী সভাপতি।

ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস নেতৃত্ব সংকটে। কয়েক বছর ধরে এ সংকট চলছে। এ সময় বেশ কয়েকজন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা দলটি ছেড়ে চলে যান। সর্বশেষ কংগ্রেস ছেড়েছেন দলের একসময়ের জ্যেষ্ঠ নেতা গুলাম নবী আজাদ। কাশ্মীরের এই কংগ্রেস নেতা দল ছাড়ায় উপত্যকার অনেকে কংগ্রেস ছেড়েছেন।