জাতিসংঘে ভাষণ
কাশ্মীর নিয়ে শাহবাজের কঠোর হুঁশিয়ারি, পাল্টা জবাব দিল্লির
জাতিসংঘে শাহবাজ শরিফ বলেছেন, যেকোনো আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দিতে তাঁরা প্রস্তুত।
জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে গত শুক্রবার ভারতকে হুঁশিয়ার করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, যেকোনো আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দিতে তাঁরা প্রস্তুত। তিনি বলেন, ভারত শান্তির পথ পরিত্যাগ করেছে। সেই পথে তারা হাঁটতে চায় না। তারা জম্মু–কাশ্মীর নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছে।
শাহবাজ শরিফ বলেন, কাশ্মীরি জনগণ মিথ্যা ভারতীয় পরিচয় প্রত্যাখ্যানে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ভারতও তাদের ওপর প্রতি মুহূর্তে অত্যাচার চালাচ্ছে। সেনার সংখ্যা বাড়িয়েই চলেছে। ‘আজাদ কাশ্মীরের’ সীমানা লঙ্ঘন করে প্রায়ই। শাহবাজ শরিফ বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনে কঠোর জবাব দিতে পাকিস্তান প্রস্তুত।
এই মুহূর্তে জম্মু–কাশ্মীর বিধানসভার নির্বাচন পর্ব চলছে। তিন দফার ভোট পর্বের দুই দফা নির্বিঘ্নে কেটেছে। শেষ দফার ভোট আগামী ১ অক্টোবর। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপির কট্টরপন্থী নেতা যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, ভোট মিটলে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ভারতভুক্তির দিকে নজর দেওয়া হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে কাশ্মীরে গণভোটের আয়োজন ও ৩৭০ অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। কাশ্মীরের সঙ্গে ফিলিস্তিনেরও তুলনা টানেন তিনি। শাহবাজ বলেন, ভারতে ‘ইসলামোফোবিয়ার’ উদ্বেগজনক ছবি ধরা পড়ছে।
জাতিসংঘের আসরে কাশ্মীরের অবতারণা করা পাকিস্তান প্রায় বার্ষিক নিয়ম করে তুলেছে। সেই সব অভিযোগের জবাবও নিয়মিত দিয়ে আসছে ভারত। শুক্রবারও ‘জবাব দেওয়ার অধিকার’ অনুযায়ী সরব হন জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের প্রথম সচিব ভাবিকা মঙ্গলানন্দন। তিনি বলেন, গোটা দুনিয়া জানে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদকে হাতিয়ার করে আসছে পাকিস্তান। তাদের আমদানি করা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে আপস করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না; বরং তাদের বোঝা উচিত, সন্ত্রাসবাদ চালানোর ফল তাদেরই ভুগতে হবে।
ভাবিকা বলেন, জম্মু–কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল, আছে ও থাকবেও। যে দেশের গণতন্ত্র রিগিং–সর্বস্ব, তাদের গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলা সাজে না। পাকিস্তানের উদ্দেশে তিনি বলেন, ওরা আমাদের দেশের সংসদে হামলা চালিয়েছে। অর্থনৈতিক রাজধানী মুম্বাইয়ে হামলা চালিয়েছে। তীর্থযাত্রীদের রেহাই দেয়নি। তালিকা দীর্ঘ। হিংসার বিরুদ্ধে সেই দেশের সমালোচনা চরম ভণ্ডামি ছাড়া অন্য কিছু নয়।
জাতিসংঘে ভারত–পাকিস্তানের এই বার্ষিক কাজিয়া ও চাপানউতোরের মধ্যেই আলোচিত হচ্ছে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনভুক্ত (এসসিও) দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সম্ভাব্য যোগদানের প্রশ্নটি। ১৪ ও ১৫ অক্টোবর সেই সম্মেলনের আয়োজক দেশ পাকিস্তান। জয়শঙ্কর ওই সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করলে ৯ বছর পর তিনি হবেন দ্বিতীয় ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যিনি পাকিস্তানে যাবেন। নরেন্দ্র মোদির জমানায় শেষবার পাকিস্তান গিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। গত বছর গোয়ায় এসসিও সম্মেলনের আয়োজন করেছিল ভারত। সেখানে যোগ দিয়েছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো।