কংগ্রেসের সত্যাগ্রহে পুলিশের বাধা, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজঘাটে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

রাজঘাটে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, পি চিদম্বরমের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
ছবি: এএনআই টুইটার

দিল্লি পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থল রাজঘাটে সত্যাগ্রহ শুরু করল কংগ্রেস। রাহুল গান্ধীর সংসদ সদস্য পদ খারিজের প্রতিবাদে দিনভর সারা দেশে সত্যাগ্রহ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ রোববার সকালে রাজঘাটে পৌঁছে যান কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, পি চিদম্বরম, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, জয়রাম রমেশ, সলমন খুরশিদসহ কংগ্রেস নেতৃত্বের একটি বড় অংশ।

রাজঘাটের বাইরে এই সত্যাগ্রহ রুখতে দিল্লি পুলিশ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আজ সকালেই ১৪৪ ধারা (চারের বেশি লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ) জারি করা হয়। কিন্তু তা উপেক্ষা করেই নির্দিষ্ট সময়ে রাজঘাটে পৌঁছে যান কংগ্রেস নেতা–কর্মীরা। হাতে প্ল্যাকার্ড, রাহুলের ছবি ও দলীয় পতাকা নিয়ে সমর্থক–কর্মীরা সরকারবিরোধী স্লোগান দেন।

আজ সারা দেশের সব জেলায় মহাত্মা গান্ধীর মূর্তির সামনে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই সত্যাগ্রহের কর্মসূচি নিয়েছে কংগ্রেস। এই আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক নাম ‘সংকল্প সত্যাগ্রহ’। কর্মসূচি সফল করতে রাজঘাটে গান্ধীজির সমাধি চত্বরের বাইরে রাতারাতি এক মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। তাতে গান্ধীজির ছবির পাশে লেখা ‘সত্যমেব জয়তে’ (সত্যের জয় হবে)। সেখানে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘বিজেপি রাহুল গান্ধীর কণ্ঠ রোধ করতে চায়। সে জন্যই তাঁর লোকসভার পদ খারিজ করা হয়েছে। জনগণ জানুক, কেন রাহুলকে এই শাস্তি দেওয়া হলো।’

খাড়গে বলেন, ‘আজকের এই সত্যাগ্রহ এক দিনের জন্য। কিন্তু সারা দেশে সত্যাগ্রহীরা এ বার্তাই পৌঁছে দেবেন যে রাহুল গান্ধী সত্যের জন্য লড়াই করছেন। সত্য উদ্ঘাটিত করছেন। তিনি সাধারণ মানুষের জন্য লড়ছেন।’

প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘বিজেপি পরিবাদবাদ নিয়ে অনেক কথা বলে। আমাদের পরিবার নিয়ে দেশবাসী গর্বিত।

এই পরিবার চিরকাল দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। এই পরিবারের রক্তে গণতন্ত্র। গণতন্ত্রকে মজবুত করতে আমাদের পরিবার চিরকাল সচেষ্ট থেকেছে।’

দিল্লি পুলিশের বড় কর্তারা জানান, রাজঘাটে গান্ধী সমাধির বাইরে কোনোদিন কোনো আন্দোলন বা ধরনা হয়নি। সে জন্য ১৪৪ ধারা জারি থাকে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নেতারা উপস্থিত হয়েছেন।

পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সতর্ক।

দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে গতকাল শনিবার রাতেই দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস কমিটিকে চিঠি দিয়ে বলা হয়, সত্যাগ্রহের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেনুগোপাল সেই নির্দেশসহ টুইট করে আজ বলেন, ‘সংসদে আমাদের কণ্ঠরোধের পর সরকার এখন গান্ধীজির সমাধিতেও শান্তিপূর্ণ সত্যাগ্রহের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। বিরোধীদের বিক্ষোভ করতে না দেওয়া এখন মোদি সরকারের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এভাবে আমাদের ভয় দেখানো যাবে না। সত্যের জন্য স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি থাকবে।’

দেশের সব রাজ্যেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সংকল্প সত্যাগ্রহ পালিত হচ্ছে।