কলকাতায় দুটি পোস্টার ঘিরে চাঞ্চল্য

কলকাতার রাস্তায় নতুন এ পোস্টার ঘিরে কৌতূহল দেখা দিয়েছে
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

শাসক দলের একাধিক নেতার দুর্নীতি নিয়ে রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে দুই দিন ধরে কলকাতা শহরের বিভিন্ন এলাকায় লাগানো দুটি পোস্টার ঘিরে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বসতবাড়ি এলাকা কালীঘাট, পাশের টালিগঞ্জ, বালিগঞ্জ, ভবানীপুর, বেহালা ও হাজরা এলাকাজুড়ে একটি পোস্টার লাগানো হচ্ছে দুই দিন ধরে। পোস্টারে লেখা ‘আগামী ৬ মাসের মধ্যে সামনে আসবে নতুন তৃণমূল: ঠিক যেমন সাধারণ মানুষ চায়’। দ্বিতীয় পোস্টারটির ভাষা হলো ‘চলুন লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হউন: এ লড়াই আমাদের ২৪-এর লড়াই’।

পোস্টারের নিচে লেখা রয়েছে ‘আশ্রিতা ও কলরব’। তবে পোস্টারে রয়েছে তৃণমূলের জোড়া ফুলের প্রতীক; সেই সঙ্গে আশ্রিতা ও কলরব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতীকও। দুটি পোস্টারে ছবি রয়েছে তৃণমূল নেতা ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ছবি নেই মমতা বা অন্য কারও।

আশ্রিতা ও কলরব কলকাতার একটি পুরোনো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এখন এ সংগঠনের কর্ণধার কুমার সাহা। তিনি তৃণমূলের নেতা। কুমার সাহা আবার সমাজসেবার সঙ্গে যুক্ত। বিশেষ করে তাঁর এই সংস্থা ভবঘুরেদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। এ ছাড়া কুমার সাহার আরেকটি পরিচয় তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুবই ঘনিষ্ঠ এবং ডান হাত।

কুমার সাহার সংগঠনের নামে এই পোস্টার পড়ায় সাধারণ মানুষের মনে এ প্রশ্ন দানা বেঁধেছে, তবে কি সত্যিই দুর্নীতি ইস্যুতে বিভাজনের পথে তৃণমূল? যদিও এ সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা।

গতকাল তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন, পোস্টারের এ ভাষা ভিত্তিহীন ও ভুয়া। দলের তরফ থেকে এটি লাগানো হয়নি। অতি উৎসাহে এগুলো লাগিয়েছেন হয়তো কোনো শুভানুধ্যায়ী। তবে এ নিয়ে এখন যে বিকৃত ব্যাখ্যা হচ্ছে, তা অনভিপ্রেত।

কুনাল ঘোষ আরও বলেছেন, মমতার নেতৃত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে প্রবীণ-নবীনদের নিয়ে তৃণমূল এক অভিন্ন পরিবার। তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সাংসদ শোভন দেব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ওই সব পোস্টার ও ফ্লেক্সের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা কোনো দলীয় পোস্টার নয়। হাজার হাজার এনজিও আছে এ রাজ্যে। তারা কে কোথায় পোস্টার লাগাচ্ছে, তা আমরা জানি না।’

এদিকে এ নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, এখন বিভিন্ন জায়গায় এই পোস্টার দেখা যাচ্ছে। ছয় মাস পর নাকি নতুন তৃণমূল পাওয়া যাবে। তাহলে এখনকার তৃণমূল কি মমতা চালাবেন? তবে এখনকার তৃণমূল কি আসল তৃণমূল নয়?

এ প্রসঙ্গে এই রাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, এবার তোলা বা চাঁদা আদায়ের জন্য নতুন রাস্তা তৈরি করার প্রচেষ্টা নিয়েছে। আসলে তো ছয় মাস পর আর এ পার্টি থাকবে না। ডিসেম্বরে ঝাঁপ গুটিয়ে যাবে এ পার্টির।

এদিকে এ বিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি মহারাষ্ট্রের মতো নতুন একজন শিন্ডে খুঁজছে। বিজেপি এখন নতুন এই শিল্ডের জন্য মুখিয়ে আছে।