২৬ হাজার প্রার্থীর চাকরি বাতিলের নির্দেশে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি
গত সোমবার ভারতের কলকাতা হাইকোর্ট পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দেওয়া প্রায় ২৬ হাজার মানুষের চাকরিকে অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিলের আদেশ দিয়েছেন। সেই আদেশের বিরুদ্ধে গত বুধবার ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন। চাকরি নিয়ে এই ব্যাপক দুর্নীতির কারণে উত্তাল হয়ে পড়েছে রাজ্যের রাজনীতি।
অভিযোগ আছে, লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে এই চাকরি বিক্রি করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তা ও তৃণমূলের নেতারা। এরপর সিবিআইয়ের অভিযানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবীর বাসভবন থেকে উদ্ধার হয় ৫০ কোটি রুপি। এখন পার্থসহ শিক্ষা দপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও তৃণমূলের নেতা কারাগারে।
রাজ্যের সব বিরোধী দল চাকরির দুর্নীতিকান্ডের প্রধান হিসেবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করেছে। তারা বলেছে, লাখ লাখ টাকা ঘুষের মাধ্যমে তিনি চাকরি বিক্রি করেছেন। এই অপরাধে তাঁকে অবিলম্বে ইস্তফা দেওয়ারও দাবি তুলেছে তারা।
হাইকোর্টের রায় নিয়ে মমতা বলেছিলেন, ‘এখনতো এখানের বিচারালয় বিজেপির বিচারালয় হয়ে গেছে। দিল্লির বিজেপির নির্দেশে বিচারক নিয়োগ হয়। বিচার হয়। আমরা এই রায়কে অবৈধ মনে করি। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছি। ওরা আমাকে জেলে পাঠাবে, আমি তৈরি। আমি হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করছি। আমি চাকরিহারাদের পাশে আছি। আমার যতদূর যেতে হয় যাব। আমি তৈরি।’
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘আমরা চাকরিহারা যোগ্য প্রার্থীদের পাশে আছি। প্রয়োজনে আমরা আইনি সহায়তা দেব। কেন সব যোগ্য ও অযোগ্য চাকুরিপ্রাপ্তদের এক তালিকায় রাখা হল?’
সোমবার দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশের পর সোচ্চার যোগ্য প্রার্থীরাও। তাদের অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি বাঁচাতে যোগ্যদের সঙ্গে একসঙ্গে তালিকা তৈরি করেছেন যাতে অযোগ্যরা এক তালিকায় থেকে চাকরিতে বহাল থাকতে পারে। গতকালও তারা কলকাতার ধর্মতলাসহ বিভিন্ন স্থানে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে শরিক হন। পথঘাট অবরোধ করে মিছিল করেন। অবস্থান ধর্মঘট করেন।