মণিপুরে আবার পৃথক প্রশাসন চাইলেন ১০ কুকি-জোমি বিধায়ক

মণিপুরে কুকি জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের বিক্ষোভ। গত বছরের মে মাসে তোলাএএনআই ফাইল ছবি

উত্তর ভারতের রাজ্য মণিপুরের স্থানীয় কুকি-জোমি জাতিগোষ্ঠীর ১০ বিধায়ক পৃথক রাজ্য প্রশাসনের দাবি তুলেছেন। এ দাবি করে তাঁরা দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে চিঠি দিয়েছেন গতকাল সোমবার।

এই জাতিগোষ্ঠীর বিধায়কেরা গত বছরেও এই একই দাবি তুলেছিলেন। গত বছরের মে মাস থেকে জাতিভিত্তিক ও সাম্প্রদায়িক সংঘাতে দুই শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন মণিপুরে। এখনো ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ২০২৪ সালেও নতুন করে সংঘাত শুরু হয়েছে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী মণিপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। চলতি বছর নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে নিহত হওয়ার সংখ্যা অন্তত ২০।

কট্টরপন্থী মেইতেই গোষ্ঠী আরামবাই টেঙ্গোলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন কুকি-জোমি বিধায়কেরা। মেইতেই বিধায়ক ও সংসদ সদস্যরা ২৪ জানুয়ারি বাধ্যতামূলকভাবে এক বৈঠকে হাজির হওয়ার নির্দেশকে ‘ভারতের সংবিধানের সম্পূর্ণ ভাঙনের’ চিহ্ন বলে মন্তব্য করেছেন।

কুকি-জোমি এমএলএ তাঁদের চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, ‘রাজধানী ইম্ফলে আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। আরামবাই টেঙ্গোলের এই তালেবান-সদৃশ কাজটি (মেইতেই সমাজের জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা, এমএলএ, এমপিদের সমন জারি করে ডেকে পাঠানো এবং প্রকাশ্যে ধমকানো) মণিপুর উপত্যকায় ভারতের সংবিধানের সম্পূর্ণ ভাঙনের প্রকাশ। রাজ্য সরকার আরামবাই টেঙ্গোলের নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য হচ্ছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের উপস্থিতি সত্ত্বেও সশস্ত্র মিলিশিয়ার রাস্তা দখল করে নেওয়ার মতো ঘটনা স্বাধীন ভারতে নজিরবিহীন। অতএব, এই জটিল সময়ে একটি বিকল্প রাজনৈতিক সমাধানের প্রয়োজন জরুরি।’

সমন জারি করে মেইতেই সমাজের রাজনৈতিক নেতাদের ডেকে পাঠিয়ে লাঞ্ছনা করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্যই মণিপুরের কুকিরা একটি সভা ডেকেছিলেন। সেই সভাতেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রাজকুমার রঞ্জন সিংসহ সব বিধায়ক ও এমপি ইম্ফলের কেন্দ্রস্থলে কাংলা দুর্গের মধ্যে এই সভায় উপস্থিত ছিলেন। গোটা কাংলা দুর্গ ঘিরে বিরাট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল সরকার।

এই বৈঠকে অন্তত তিনজন মেইতেই এমএলএকে লাঞ্ছিত করা হয় বলে জানা যায়।