পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভুল হয়েছিল, তৃণমূলের মন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে উত্তাপ

পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ
ছবি: প্রথম আলো

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনপদ্ধতি ভুল ছিল, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহের এমন মন্তব্য নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে। বিরোধীরা বলছেন, এমন ভুল তৃণমূল আবার করবে। আর আবার সন্ত্রাস করেই তারা জেতার চেষ্টা করবে।

গত বৃহস্পতিবার কোচবিহারে তৃণমূল আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনী উৎসবে উদয়ন গুহ বলেন, ২০১৮ সালের সর্বশেষ পশ্চিমবঙ্গের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের নির্বাচনপদ্ধতি ছিল ভুল। সেই ভুল শুধরে এবার এই রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে করতে চায় তৃণমূল।

উদয়ন গুহ বলেন, ‘আমরা যেভাবে জিতেছিলাম, তা সাধারণ মানুষ মেনে নেয়নি। আমাদের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে পদক্ষেপে ভুল ছিল। এ কারণে লোকসভা নির্বাচনে পরাজয় ঘটেছিল। আর এ পরাজয়ের জন্য দলের কর্মীরা দায়ী ছিলেন না। দায়ী ছিলেন মূলত কিছু নেতাই।’

মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েতের ভুলের জন্য ২০১৯ সালে এই রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে ব্যাপক পরাজয় ঘটেছিল তৃণমূলের।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২ আসনের মধ্যে ২২টি আসনে জিতেছিল তৃণমূল আর ১৮টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। বাকি ২টি আসনে কংগ্রেস। শূন্য ছিল বাম দলের আসন।

মন্ত্রী উদয়ন গুহের এ কথায় দলের ভেতরেই প্রতিবাদ হয়েছে। সাবেক উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্র নাথ ঘোষ বলেছেন, ২০১৮ সালে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে। কোচবিহারের ১২৮টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২৬টি দখল করেছে। আর লোকসভা নির্বাচনে দলের মধ্যে বেশ কজন নেতার পেছন দিক থেকে ছুরি মারার কারণে দলকে হারতে হয়েছিল।

তবে কোচবিহারের বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেছেন, পঞ্চায়েতে ভুল করে থাকলে পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে কেন তৃণমূল শুধরে নিল না? আগামী নির্বাচনেও সন্ত্রাস চালাবে, ভোট ডাকাতি হবে। আর এ নিয়ে এখন থেকে মানুষকে আরও সজাগ থাকতে হবে।

২০১৮ সালের ১৪ মে সর্বশেষ পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক সন্ত্রাস করেছিল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গের ২০টি জেলার এই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল এক দিনে। ভোটদানে বাধা, ব্যালট ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই, এজেন্টকে ঢুকতে বাধা, ইভিএম ভাঙচুর ও লুট করা, জোর করে নিজেদের দলের  প্রতীকে ভোটদান, নির্বাচন কর্মকর্তাকে অপহরণ এবং মারপিটের মধ্য দিয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনের দিন ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।