বিচারপতি অভিজিতের মন্তব্য নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তোলপাড়

কলকাতা হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্যকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি তোলপাড় হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির তমলুক আসনের প্রার্থী হওয়া এবং কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির পদ থেকে সদ্য ইস্তফা দেওয়া অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তৃণমূলের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। ওই মন্তব্যের জেরে তৃণমূল দাবি তুলেছে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে ক্ষমা চাইতে হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের এক্স হ্যান্ডেলে অভিজিতের ওই সাক্ষাৎকারের একটি অংশ পোস্ট করা হয়। যে অংশে বিচারপতি অভিজিৎ একটি মন্তব্য করে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে হচ্ছে মৃত্যুঘণ্টা বেজে গিয়েছে।’

ওই মন্তব্যের আগে–পরে কী মন্তব্য করেছেন, তা উল্লেখ না করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, ‘বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মমতার মৃত্যু কামনা করেছেন।’ আর এ নিয়ে এই রাজ্যের রাজনীতি তোলপাড় হতে থাকে। তৃণমূল দাবি করেছে, অবিলম্বে বিচারপতি অভিজিতের ক্ষমা চাইতে হবে। শুধু তা–ই নয়, এই মন্তব্যের প্রতিবাদ করতে তাঁরা নির্বাচন কমিশনেরও দ্বারস্থ হচ্ছেন।

পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আপনি তো বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আপনার কথার মধ্যে যুক্তি থাকা উচিত। কোন তলানিতে গিয়ে আপনি ঠেকেছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু কামনা করছেন। কেন আপনি বিজেপিতে গিয়েছেন, এখন তা বোঝা যাচ্ছে। কারণ, বিজেপি কারোর ভালো কামনা করেন না। এটা বিজেপির চরিত্র।’

আবার রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘তিনি একসময় বিচারপতির আসনে ছিলেন। তখনো আমরা বলেছিলাম, বিচারপতির আসনকে কলুষিত করছেন ওই ব্যক্তি। এত দিন তিনি মুখোশ পরে ছিলেন, এখন সেই মুখোশ খুলে গেছে।’
এই সমালোচনার মুখে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আলংকারিক অর্থে কথাটা বলেছি, মমতার দলের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গিয়েছে। ব্যক্তি মানুষের মৃত্যুর কথা বলিনি।

তবে আমার কথা বলার একটা ফাঁক ছিল। ভেবেছিলাম, তিনি পদ্য লেখেন, বুঝবেন যে এটা ব্যক্তি মানুষের মৃত্যু কামনা নয়, আলংকারিক অর্থে প্রয়োগ করা হয়েছে।’
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এ কথাও বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন আমার কাছে জানতে চাইলে আমি উত্তর দিয়ে দেব।’