এক দশক পর লোকসভায় বিরোধী নেতা পাচ্ছে ভারত

ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী। ভারতের নয়াদিল্লিতে পার্টির সদর দপ্তরে। ৪ জুন, ২০২৪ছবি: রয়টার্স

এক দশক পর ভারত লোকসভায় বিরোধীদলীয় নেতা পেতে যাচ্ছে। আর সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীরই সেই নেতা হওয়ার জোর সম্ভাবনা। আজ শনিবার দল থেকে রাহুল গান্ধীকে সর্বসম্মতভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অন্য শরিকদের সঙ্গে আলোচনা হবে।

রাহুলকে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ বৈঠকে বসেছিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতার। বৈঠক শেষে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি ভেনুগোপাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, লোকসভায় রাহুল গান্ধীকে বিরোধী নেতা করা-সংক্রান্ত প্রস্তাব সব অংশগ্রহণকারী সর্বসম্মতভাবে পাস করছেন।  

ভারতের কেন্দ্রীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভা ২০১৪ সাল থেকে বিরোধীদলীয় নেতাশূন্য ছিল। কারণ, লোকসভায় বিরোধী নেতা হওয়ার জন্য কোনো একক দলকে মোট ৫৪৩ আসনের অন্তত ১০ শতাংশ পেতে হয়। কিন্তু গত দুই লোকসভার নির্বাচনে কংগ্রেস বা অন্য কোনো দল তা পূরণ করতে পারেনি। এবার কংগ্রেস ৯৯টি আসন পাওয়ায় সেই খরা দূর করতে পারে।

এদিকে আগামীকাল রোববার টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। এবারের নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছে ২৪০ আসন। দলটি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য ৫৪৩ আসনের মধ্যে কোনো দলকে ২৭২ আসন পেতে হয়। এই পরিস্থিতিতে সরকার গঠনের জন্য বিজেপিকে এনডিএ জোটের শরিকদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। লোকসভায় এবার এনডিএর আসন ২৯৩টি।

আরও পড়ুন

অন্যদিকে এবার কংগ্রেস পেয়েছে ৯৯ আসন। আরও দুই স্বতন্ত্র এমপি কংগ্রেসকে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে সাকল্যে কংগ্রেসের আসন দাঁড়াচ্ছে ১০১। আর কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২৩৩ আসন।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়। তখন ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে দলটির সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাহুল গান্ধী। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর বড় কৃতিত্ব তাঁর বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

৫৩ বছর বয়সী রাহুল গান্ধী ২০০৪ সালে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন। এর পর থেকে তিনি কখনো কোনো সাংবিধানিক পদ গ্রহণ করেননি। এমনকি তাঁর দল ক্ষমতায় থাকার সময়ও নয়।

গত বছর রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি নিয়ে ব্যঙ্গ করার অভিযোগ করে বিজেপি। এরপর এক মানহানির মামলায় তাঁর লোকসভার সদস্যপদ বাতিল করা হয়। তবে পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তিনি তাঁর সদস্যপদ ফিরে পান।