ভারতে বাসে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ২০, জানালা দিয়ে লাফিয়ে প্রাণে বাঁচলেন কেউ কেউ
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের কুরনুলে একটি বাসে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ভলভো বাসটিতে আগুন ধরে যায়।
হায়দরাবাদ থেকে বেঙ্গালুরুগামী বাসটিতে ৪১ জন আরোহী ছিলেন।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ বলছে, একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে বাসের জ্বালানি ট্যাঙ্ক ফেটে আগুন ধরে যায়। এ ঘটনায় যাত্রীরা বাসের ভেতরে আটকে পড়েন।
অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু বর্তমানে দুবাইতে অবস্থান করছেন। ঘটনার পর তিনি ফোনে অন্ধ্র প্রদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং পরিস্থিতির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সরকার সব রকম সহায়তা প্রদান করবে।
অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু বর্তমানে দুবাইতে অবস্থান করছেন। ঘটনার পর তিনি ফোনে অন্ধ্র প্রদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং পরিস্থিতির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সরকার সব রকম সহায়তা প্রদান করবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘কুরনুল জেলার চিন্না তেকুর গ্রামের কাছে বাসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে আমি হতবাক। যাঁরা তাঁদের প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা।’
টিডিপি দলের বিধায়ক লোকেশ নারা বলেন, ‘কুরনুল জেলার চিন্না তেকুর গ্রামের কাছে বাসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবরটি হৃদয়বিদারক। যাঁরা প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আহত ব্যক্তিদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’
কুরনুলে বাসে আগুন লাগার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে অন্ধ্র প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডি বলেন, ‘যাঁরা প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। মর্মান্তিক এ ঘটনায় আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় সব সহায়তা এবং চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
কুরনুলের জেলা প্রশাসক এ সিরি বলেন, কাবেরি ট্রাভেলস বাসে ৪১ জন যাত্রী ছিলেন। তিনি বলেন, ‘দিবাগত রাত ৩টা থেকে ৩টা ১০ মিনিটের দিকে একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় জ্বালানি ট্যাঙ্ক ফেটে যায়। ট্যাঙ্ক থেকে জ্বালানি চুইয়ে পড়ে এবং ঘর্ষণের কারণে আগুন লেগে থাকতে পারে।
কুরনুলের জেলা প্রশাসক এ সিরি বলেন, কাবেরি ট্রাভেলস বাসে ৪১ জন যাত্রী ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘দিবাগত রাত ৩টা থেকে ৩টা ১০ মিনিটের দিকে একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় জ্বালানি ট্যাঙ্ক ফেটে যায়। ট্যাঙ্ক থেকে জ্বালানি চুইয়ে পড়ে এবং ঘর্ষণের কারণে আগুন লেগে থাকতে পারে।’
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, ৪১ আরোহীর মধ্যে ২১ জন অক্ষত অবস্থায় বাস থেকে নামতে পেরেছেন।
কুরনুলের পুলিশ সুপার বিক্রান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আমরা মরদেহ উদ্ধার করা শুরু করেছি… ডিএনএ সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্ট লোকজন এখানে আছেন।’
প্যাটেল আরও বলেন, ‘চালক বলেছেন, দুর্ঘটনার পর তিনি আগুন দেখতে পান এবং দ্বিতীয় চালককে জাগান। তাঁরা ভেবেছিলেন এটি ছোট আগুন। পানির বোতলে থাকা পানি দিয়ে তাঁরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিছু যাত্রী ঘুম থেকে জেগে বের হয়ে আসতে সক্ষম হন এবং হাইওয়ের পাশে থাকা অন্য লোকজনের সহযোগিতা নিয়ে বাসের জানালা ভেঙে ফেলেন। তাঁরা অনেককে বাইরে লাফ দিতে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে অনেককেই বাঁচানো যায়নি।’
হায়দরাবাদ-বেঙ্গালুরু রুটে বাসে আগুন লাগার দ্বিতীয় বড় ঘটনা এটি। এর আগে ২০১৩ সালের ৩০ অক্টোবর বেঙ্গালুরু থেকে হায়দরাবাদ যাওয়ার পথে একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন বাসে আগুন লাগার ঘটনায় ৪৫ যাত্রী জীবিত অবস্থায় পুড়ে মারা যান। হায়দরাবাদ থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দূরে মাহবুবনগর জেলার পালোম এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছিল।