ভারতে বুকারজয়ী গীতাঞ্জলির অনুষ্ঠান বাতিল

বুকার পুরস্কারজয়ী ভারতীয় লেখিকা গীতাঞ্জলি পান্ডে
ছবি: টুইটার থেকে

বুকার পুরস্কারজয়ী ভারতীয় লেখিকা গীতাঞ্জলি পান্ডের (গীতাঞ্জলি শ্রী নামে পরিচিত) একটি অনুষ্ঠান হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর বিরোধিতায় বাতিল হয়ে গেল। উত্তর প্রদেশের আগ্রায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গীতাঞ্জলির একটি অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যায় কিছু হিন্দুত্ববাদীর প্রতিবাদের কারণে। গীতাঞ্জলির বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ তুলে পুলিশে অভিযোগ করা হয়।

গত মে মাসে হিন্দি ভাষার লেখিকা ৬৫ বছরের গীতাঞ্জলি তাঁর বই ‘বালু সমাধি’র জন্য বুকার পান। এই প্রথম হিন্দি ভাষার কোনো লেখিকা এই পুরস্কার পেলেন। বইটি ইংরেজিতে অনুবাদের জন্য তাঁর সঙ্গে পুরস্কার পান শিল্পী ও অনুবাদক ডেইজি রকওয়েল।

শনিবার উত্তর প্রদেশের আগ্রায় গীতাঞ্জলি শ্রীকে এক অনুষ্ঠানে বুকার পুরস্কারের জন্য সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগে জানা যায়, পশ্চিম উত্তর প্রদেশের জেলা হাথরাসে সন্দীপকুমার পাঠক নামের এক ব্যক্তি গীতাঞ্জলির নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থা রঙলীলা এবং আগ্রা থিয়েটার ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লেখিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, হিন্দু দেবতা শিব এবং দেবী পার্বতীর নামে ‘বালু সমাধি’তে আপত্তিজনক মন্তব্য করা হয়েছে। তাঁর মন্তব্য হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত দিয়েছে।

এই অনুষ্ঠান নিয়ে আগ্রায় মানুষের মধ্যে প্রবল উৎসাহ ছিল বলে আয়োজকেরা জানিয়েছেন। এর অন্যতম প্রধান কারণ, উত্তর প্রদেশ রাজ্যেই বড় হয়েছেন গীতাঞ্জলি।
দিনকয়েক আগেই দিল্লির এবং ভারতের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন গীতাঞ্জলিকে সংবর্ধনার আয়োজন করেন।

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ছাত্র এবং যুবকদের সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ সেই অনুষ্ঠান বানচাল করে দেওয়ার প্রবল চেষ্টা চালায়। কিন্তু তারপরও নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানটি হয়।

আগ্রার আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন লেখিকা। তিনি বলেন, পৌরাণিক ঘটনার ওপর ভিত্তি করে তাঁর বইতে যা লেখা হয়েছে, তার উদ্দেশ্য কোনো মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা নয়।

তবে এ ঘটনার জেরে আপাতত প্রকাশ্য অনুষ্ঠান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গীতাঞ্জলি, জানিয়েছেন আয়োজকেরা।