পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জিতবে বিজেপি: অমিত শাহ
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অমিত শাহ কলকাতায় এসে দৃশ্যত আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের বাঁশি বাজিয়ে গেলেন। বুধবার একটি সভায় তিনি দাবি করেন, আসন্ন নির্বাচনে বিজেপি দুই–তৃতীয়াংশ আসনে জিতবে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করে বাংলায় সরকার গড়বে।
একই দিন বাঁকুড়ায় এক সভা থেকে তৃণমূল নেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাইলে এই বাংলায় আপনাকে এক পা–ও বেরোতে দিতাম না।’ একই সঙ্গে মমতা সমন্বিত সংশোধনী ভোটার তালিকা প্রণয়নের আড়ালে বাংলার মানুষকে হয়রানির অভিযোগ তুলে অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেন।
কলকাতার নিউটাউনের একটি অভিজাত হোটেলে বক্তব্য দেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘বাংলা আজ দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। তৃণমূলের দুর্নীতির কারণে রাজ্যের উন্নয়ন আটকে গেছে। এই দুর্নীতিরাজের হাত থেকে বাংলাকে মুক্ত করার জন্য এপ্রিলে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি দুই–তৃতীয়াংশ আসন পেয়ে সরকার গড়বে।’
অমিত শাহ আরও বলেন, মতুয়ারা এ দেশের শরণার্থী এবং তাঁদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। তিনি দাবি করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়াদের নাগরিকত্ব আটকাতে পারবেন না। বিজেপিই মতুয়াদের জন্য সবকিছু করবে এবং পশ্চিমবঙ্গকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, ভোটব্যাংকের রাজনীতির কারণে বাংলার জনবিন্যাস বদলে গেছে এবং অনুপ্রবেশকারীদের রমরমা বেড়েছে। তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকার অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি বলেন, সময় এসেছে বাংলায় অনুপ্রবেশকারীদের সরিয়ে দেওয়ার। বিজেপি ক্ষমতায় এলে একজন অনুপ্রবেশকারীও বাংলায় ঢুকতে পারবে না বলে তিনি দাবি করেন।
অন্যদিকে বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় তৃণমূলের এক সভায় অমিত শাহকে সরাসরি নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ভোট এসে গিয়েছে। একজন দুঃশাসক এসেছেন। বাংলায় ভোট এলে এই দুঃশাসনকারীরা আবার সক্রিয় হয়ে ওঠেন। ওদের দুচোখ দেখলেই আতঙ্ক তৈরি হয়। শকুনি মামার চ্যালা চামুণ্ডারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন, বলছেন বাংলায় দেড় কোটি লোকের নাম বাদ যাবে।’
মমতা আরও অভিযোগ করেন, সমন্বিত ভোটার তালিকা প্রণয়নের নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘তুমি এসআইআর করতে দুই মাস সময় নিলে, আর দেড় কোটি লোককে বাদ দিতে মাত্র দুদিন সময় দিলে!’ এই অভিযোগ তুলে অমিত শাহের পদত্যাগও দাবি করেন তিনি।