ইডির চার্জশিটে প্রিয়াঙ্কা

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীছবি: এএনআই

কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে এবার প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রর নাম জড়াল। ভারতের দিল্লির লাগোয়া হরিয়ানার ফরিদাবাদে কিছু কৃষিজমি কেনাবেচা মামলার চার্জশিটে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কার নাম ইডি উল্লেখ করেছে। তবে চার্জশিটে তাঁকে অভিযুক্ত হিসেবে জাহির করা হয়নি।

আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ইডির কোনো চার্জশিটে এই প্রথম প্রিয়াঙ্কার নাম উল্লেখ করা হলো। ইডির চার্জশিটে বলা হয়েছে, দিল্লির এক এজেন্ট এইচ এল পাহওয়ার কাছ থেকে প্রিয়াঙ্কা ২০০৬ সালে কিছু জমি ও বাড়ি কিনেছিলেন। চার বছর পর ২০১০ সালে সেই জমিই আবার ওই এজেন্টের কাছে তিনি বেচে দেন।

ইডির দাবি, ওই একই এজেন্টের কাছ থেকে প্রিয়াঙ্কার স্বামী রবার্টও ২০০৫-০৬ সালে ৪০ একরের মতো জমি কিনেছিলেন। সেই জমিও ২০১০ সালে আবার তাঁকেই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। ইডির চার্জশিটে রবার্টের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু প্রিয়াঙ্কার মতো রবার্টকেও অভিযুক্ত বলে জাহির করা হয়নি।

ঠিক পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে বেআইনি আর্থিক লেনদেন ও বেনামি সম্পত্তি কেনাবেচার অভিযোগে রবার্টকে ইডি ছয় ঘণ্টা ধরে জেরা করেছিল। পাঁচ বছর পর লোকসভা ভোটের আগে এবার নাম জড়ানো হলো প্রিয়াঙ্কার।

ইডি এই চার্জশিট দাখিল করেছে অনাবাসী ভারতীয় ব্যবসায়ী সি সি থাম্পি ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সুমিত চাড্ডার বিরুদ্ধে। ইডির অভিযোগ, অস্ত্র ব্যবসার দালাল সঞ্জয় ভান্ডারির টাকাকড়ি লুকিয়ে রাখতে তাঁরা সাহায্য করেছেন। থাম্পিকে ২০২০ সালে ইডি গ্রেপ্তার করেছিল। পরে তিনি জামিন পান। ভান্ডারি পলাতক। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ভারতে প্রত্যর্পণের দাবি অনুমোদন করেছে।

সঞ্জয় ভান্ডারির সঙ্গে গান্ধীদের ‘যোগসাজশের’ অভিযোগ ইডি অনেক দিন ধরেই করে আসছে। ইডির দাবি, লন্ডনে তাঁর সঙ্গে রবার্ট একটি বেনামি সম্পত্তিও কিনেছিলেন। সেই বাড়ি মেরামতের জন্য রবার্ট ও তাঁর সচিবের কিছু ‘ই–মেইল আদান–প্রদানের তথ্য’ গত লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সরকার প্রকাশ করেছিল। সেই ই-মেইলে নাকি ওই বাড়ি সংস্কারে টাকাকড়ি খরচ নিয়ে কথা হয়েছিল। পরে সেই বাড়ি নাকি বিক্রি করে দেওয়া হয়। যদিও সে বিষয়ে তদন্তের কোনো অগ্রগতি হয়েছে কি না, ইডি আজ পর্যন্ত তা জানায়নি।

ইডির দাবি, অস্ত্রসহ তেলের ব্যবসা পাইয়ে দেওয়ার দালালি হিসেবে সঞ্জয় যে অর্থ পেয়েছিলেন, তারই অংশ ঘুর পথে গান্ধীদের দেওয়া হয়েছিল।

প্রিয়াঙ্কা বা রবার্ট—কেউই এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু ও মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোলের সঙ্গে আম আদমি পার্টির মুখপাত্র প্রিয়াঙ্কা কাক্কর ইডির সমালোচনা করেছেন। সবার বক্তব্য, সরকার অনেক দিন ধরেই এভাবে বিরোধীদের দমাতে চাইছে। এটা নতুন কিছু নয়। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে কংগ্রেসকে নিয়ে বিজেপি কতটা ভীত।