আইনসভায় ঘুষ নিয়ে ভোট বা ভাষণ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে

ভারতের সুপ্রিম কোর্টফাইল ছবি

সংসদ বা বিধানসভায় কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে ভোট দেওয়া বা ভাষণের অভিযোগ এলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। কোনো রক্ষাকবচ থাকবে না। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আজ সোমবার এই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন।

১৯৯৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই ধরনের অভিযোগের আওতা থেকে সংসদ সদস্য–বিধায়কদের যে ছাড় দিয়েছিলেন, যে রক্ষাকবচের আওতায় আইনসভার সদস্যদের রেখেছিলেন, আজ সাত বিচারপতির বেঞ্চ তা খারিজ করে দিলেন।

প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছেন, ১৯৯৮ সালের রায়ে দেওয়া ওই রক্ষাকবচ সংবিধানের ১০৫ ও ১৯৮ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। সংসদে বা বিধানসভায় ঘুষ নিয়ে কেউ ভোট দিলে বা ভাষণ দিলে তাঁর বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

বিচারপতিরা রায়ে বলেছেন, সংসদীয় অধিকারের আওতায় ঘুষ থাকতে পারে না। ঘুষ বা দুর্নীতি ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। রায়ে এ কথাও বলা হয়েছে, কোনো বিধায়ক ঘুষ নিয়ে রাজ্যসভা নির্বাচনে ভোট দিলে তাঁর বিরুদ্ধেও দুর্নীতি রোধ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

১৯৯৩ সালে নরসীমা রাও সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল। জুলাইয়ে নরসীমা রাওয়ের বিরুদ্ধে আনা সেই অনাস্থা প্রস্তাব পরাস্ত হয়েছিল ২৬৫–২৫১ ভোটে। সংখ্যালঘু হয়েও রাও সরকার টিকে গিয়েছিল পুরো পাঁচ বছর। তবে ১৯৯৪ সালে অভিযোগ ওঠে, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার সদস্যরা রাও সরকারের পক্ষে ভোট দিতে ঘুষ নিয়েছিলেন। সেই অভিযোগে মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে।

১৯৯৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ রায় দিয়েছিলেন, আইনসভার ভেতরে আইনসভার সদস্যদের রক্ষাকবচ রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। সেই রায় ছিল ৩–২ সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে। আজ সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির বেঞ্চ সেই রায় বদলে দিলেন।