বাজার হারাচ্ছে, চীনা ফোন ঠেকাতে যে যে উদ্যোগ নিচ্ছে ভারত

১২ হাজার রুপির চেয়ে কম দামের চীনা স্মার্টফোন নিষিদ্ধ করা হতে পারে ভারতের বাজারে। বিশ্লেষকদের ধারণা, এতে করে চীনের সংস্থাগুলোর বাজার ধসে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারতের বাজারে চীনের স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো রমরমা ব্যবসা করছে। এ জন্য ১২ হাজার রুপির (১৫০ মার্কিন ডলার) চেয়ে কম দামে চীনা ফোন ভারতে বিক্রির পথ বন্ধ করার চিন্তাভাবনা করছে দেশটির সরকার। উদ্দেশ্য, ঝুঁকিতে থাকা দেশীয় কোম্পানিকে একটু চাঙা করা। এ পদক্ষেপে চীনা মুঠোফোন কোম্পানিকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুঠোফোন মার্কেটে একটু পিছিয়ে রাখার চেষ্টা। এতে করে ভারতের মুঠোফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসার একটা পথ তৈরি হবে।

মার্কেট ট্র্যাকার কাউন্টার পয়েন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের জুনে ভারতের ফোন বিক্রয়ের মোট পরিমাণের এক–তৃতীয়াংশ বিক্রি হয়েছে ১২ হাজার রুপির কম দামের ফোন। আর এ বিক্রির ৪০ শতাংশই চীনা কোম্পানির ফোন।

তবে ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে ভারতে যদি ১২ হাজার রুপির কম দামে চীনা স্মার্টফোন নিষিদ্ধ করে, তাতে শাওমির মতো ফোন কোম্পানিগুলোর বাজার হারাবে। এ নিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, ‘ভারত যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেদিকে নজর আছে বেজিংয়ের। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, ভারত ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় আছে।’ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহযোগিতার যে প্রতিশ্রুতি আছে, তা পূরণ করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে চীনের শাওমি, ওপ্পো ও ভিভোর মতো ফোন কোম্পানিগুলোর অর্থের পরিমাণ, উৎস নিয়ে তদন্ত করছে ভারত। এর ফলে ট্যাক্স ডিমান্ড এবং অর্থ পাচারের মতো গুরুতর অভিযোগগুলো উঠেছে। এর আগে মোদি সরকার হুয়াওয়ে টেকনোলজিস এবং জেডটিই করপোরেশন টেলিকম সরঞ্জাম নিষিদ্ধের জন্য নানা পথ অবলম্বন করেছে।

তবে, ভারতের এ কঠোর পদক্ষেপ অ্যাপল বা স্যামসাংয়ের মতো সংস্থাগুলোকে প্রভাবিত করবে না। কারণ, ১২ হাজার রুপি রেঞ্জে কোনো ফোনই বিক্রি করে না অ্যাপল। স্যামসাং বিক্রি করলেও তা সংখ্যায় খুবই কম। তবে এ বিষয়ে এখনো শাওমি, রিয়েলমি এবং ট্র্যানসনের মতো ফোন কোম্পানিগুলো কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।

দুই বছর আগে ২০২০ সালের লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীন ও ভারতের মধ্য উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ভারত তিন শতাধিক চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে। সেই তালিকায় ছিল ট্র্যানসেনের উইচ্যাট ও টিকটকের মতো জনপ্রিয় অ্যাপ। ভারতের অভিযোগ ছিল, এ অ্যাপগুলোর মাধ্যমে ভারতীয়দের তথ্য গোপনে চীনের সার্ভারে পাঠানো হতো।