কংগ্রেসের আরও দাবি, হিনডেনবার্গ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও কারচুপির অভিযোগের তদন্তে যুগ্ম সংসদীয় কমিটি গঠন করতে হবে।
ভারতবিরোধিতায় ‘আন্তর্জাতিক চক্রান্ত তত্ত্ব’ তুলে ধরে বিজেপি কংগ্রেসকে কোণঠাসা করতে সচেষ্ট। বিরোধীদের ধারণা, এটা তারা করছে আদানি ইস্যু থেকে দৃষ্টি এড়াতে। হিনডেনবার্গ প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে বহু ক্ষেত্রে আদানি গোষ্ঠী লাভবান হয়েছে।
লোকসভায় রাহুল সরাসরি এ কথাও জানতে চেয়েছিলেন, গৌতম আদানি কতবার প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও ইসরায়েল সফরে আদানি গোষ্ঠীর জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদির তদ্বিরের সুস্পষ্ট অভিযোগও উঠেছে। তদন্তের জন্য বিরোধীদের সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি এড়াতেই ইংল্যান্ডে রাহুলের বক্তব্যকে বিজেপি বড় করে তুলে ধরতে চাইছে বলে কংগ্রেসের ধারণা। সে কারণে লোকসভার সঙ্গে রাজ্যসভায়ও বিজেপি সরব। অথচ রাহুল লোকসভার সদস্য। সংসদীয় প্রথা অনুযায়ী, কোনো এক কক্ষের সদস্যকে নিয়ে অন্য কক্ষে আলোচনা চলতে পারে না। যদিও মন্ত্রীদের নিয়ে দুই কক্ষেই আলোচনা করা যায়।
আদানি প্রশ্নে যুগ্ম সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবিতে কংগ্রেস ছাড়াও সরব ডিএমকে, এনসিপি ও বামপন্থী দলগুলো। বিহারের আরজেডি, আম আদমি পার্টি ও তেলেঙ্গানার বিআরএস আবার সরব কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর রাজনীতিকরণের বিরুদ্ধে। তিন দলের নেতাদের বিরুদ্ধেই এই মুহূর্তে ইডি–সিবিআইয়ের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। দিল্লির আপ সরকারের দুই মন্ত্রীকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস ৭ দফা দাবিতে সরব। আদানি তদন্তের দাবিতে সরব হলেও তারা যে কংগ্রেসের সঙ্গে নেই, তা বোঝাতে আজ মঙ্গলবার আলাদাভাবে ধরনা দেয়। বিরোধীরা সবাই অবশ্য চান তাঁদের দাবি মেনে আলোচনা হোক।
হইহুল্লায় পরপর দুই দিন বিজেপির যোগ দেওয়া ও সংসদ অচল রাখার কৌশলও স্পষ্ট। রাহুলের নিন্দেমন্দ করে কংগ্রেসকে চাপে রাখার পাশাপাশি সরকার কেন্দ্রীয় বাজেটের মন্ত্রণালয়ভিত্তিক আলোচনা এড়াতে চায়। গতকাল সোম ও মঙ্গলবার জম্মু–কাশ্মীরের বাজেট পাস করানোর জন্য নির্ধারিত ছিল। আলোচনা হলে সরকারকে অনেক অপ্রিয় প্রসঙ্গের মোকাবিলা করতে হতো। সংসদ অচল থাকায় তা এড়ানো গেল। বিজেপির এক নেতার কথায়, আলোচনা ছাড়া বাজেট পাস হয়ে গেলে সরকারের লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই। বাজেট অধিবেশন চলবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত।