কেজরিওয়ালকে দুই সপ্তাহ থাকতে হবে তিহার জেলে

অরবিন্দ কেজরিওয়ালফাইল ছবি: এএনআই

ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে আগামী দুই সপ্তাহ তিহার জেলে কাটাতে হবে। দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউয়ের বিশেষ আদালত আজ সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছেন। আবগারি (মদ) নীতি মামলায় ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গত ২১ মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে। সেই থেকে এযাবৎ তিনি ছিলেন ইডি হেফাজতে।

আজ সোমবার হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আদালতে ইডি বলেছে, তদন্তে কেজরিওয়াল সহযোগিতা করছেন না। তিনি এখনো তাঁর মুঠোফোনের পাসওয়ার্ড ইডিকে দেননি।

১৯ এপ্রিল থেকে লোকসভা ভোট শুরু হচ্ছে। এই নির্দেশের ফলে এটা অনেকটা স্পষ্ট, প্রথম দফার ভোটে কেজরিওয়ালের প্রচার করার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

তিহার কারাগারে নিয়ে যাওয়ার আগে কেজরিওয়ালের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী সুনীতা ও দিল্লি সরকারের দুই মন্ত্রী আতিশী ও সৌরভ ভরদ্বাজকে দেখা করার অনুমতি দেন আদালত।

গ্রেপ্তারের পর কেজরিওয়াল সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু নিম্ন আদালত ও হাইকোর্ট থেকে ধাপে ধাপে না এলে সুপ্রিম কোর্ট মামলা নেবেন না বুঝতে পেরে কেজরিওয়ালের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট থেকে আবেদন প্রত্যাহার করে নেন।

পরে কেজরিওয়ালের পক্ষে হাইকোর্টে আবেদন জানালে তাঁরা এ বিষয়ে ইডিকে নোটিশ দেন। আগামীকাল মঙ্গলবার ইডি সেই নোটিশের জবাব দেবে। সেখানেও তারা নিশ্চিতভাবেই সহযোগিতা না করার কথা বলবে। কেজরিওয়ালের জামিনের আবেদন হাইকোর্ট শুনবেন ৩ এপ্রিল।

আবগারি (মদ) নীতি ঘুষ মামলায় কেজরিওয়ালের আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আম আদমি পার্টির (আপ) সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া ও রাজ্যসভার সদস্য সঞ্জয় সিংকে। একই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তেলেঙ্গানার বিআরএস নেত্রী কে কবিতাকেও।

ইডির অভিযোগ, ওই নীতি রূপায়ণের মধ্য দিয়ে কেজরিওয়াল ১০০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। ঘুষের টাকা খরচ করা হয়েছিল পাঞ্জাব ও গোয়ার নির্বাচনে।

কেজরিওয়াল যে শিগগিরই মুক্তি পাবেন না, আম আদমি পার্টি তা বুঝে গেছে। গত রোববার দিল্লির রামলীলা ময়দানের জনসভায় কেজরিওয়ালের স্ত্রী সুনীতার কথাতেও তা স্পষ্ট। তিনি তাঁর স্বামীর পাঠানো এক বার্তা ওই সমাবেশে পাঠ করেন। তাতে কেজরিওয়াল বলেছেন, কোনো কারাগার তাঁকে বেশি দিন আটকে রাখতে পারবে না। মুক্তি তাঁকে দিতেই হবে। দুই বছর ধরে তদন্ত করা সত্ত্বেও ইডি ঘুষের একটি টাকাও উদ্ধার করতে পারেনি।

মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে কেজরিওয়ালের ইস্তফার দাবিতে বিজেপি সরব। কিন্তু কেজরিওয়াল বলেছেন, তিনি কারাগারে থেকেই প্রশাসন চালাবেন। সেই মতো নির্দেশও তিনি দিচ্ছেন। তাঁকে বরখাস্ত করা কিংবা এই পরিস্থিতিতে দিল্লির সরকার ভেঙে দিয়ে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করার অধিকার কেন্দ্রীয় সরকারের থাকলেও ভোটের আগে তা করা হবে কি না, তা নিয়ে দোলাচলে রয়েছে বিজেপি সরকার।

আম আদমি পার্টিও কেজরিওয়ালের বন্দিদশাকে হাতিয়ার করতে চলেছে ভোটের প্রচারে। প্রথমে ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন ও তারপর কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার হতোদ্যম ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে কিছুটা চনমনে করে তুলেছে। গত রোববারের রামলীলা ময়দানের সমাবেশই তো তার প্রমাণ।