ভারতের জ্ঞানবাপি মসজিদের অজুখানা খুলে জরিপের দাবি

ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসিতে জ্ঞানবাপী মসজিদফাইল ছবি: রয়টার্স

এবার ভারতের বারানসির জ্ঞানবাপি মসজিদে পাওয়া ‘শিবলিঙ্গ’ জরিপের আরজি জানাল হিন্দু আবেদনকারীরা। হিন্দুদের বিশ্বাস, মুসলমানরা যেটি অজুখানার ফোয়ারা বলে দাবি করে আসছে, সেটি আদতে ‘শিবলিঙ্গ’।

আজ সোমবার হিন্দুরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়ে বলেছে, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে (এএসআই) দিয়ে ওই ‘শিবলিঙ্গের’ চরিত্র নির্ধারণের নির্দেশ দেওয়া হোক। দেখা হোক, সেখানে যা কিছু রয়েছে, তা হিন্দু বিশ্বাসের সঙ্গে মেলে কি না।

আদালতে পেশ করা এই আবেদনে হিন্দু পক্ষ বলেছে, জরিপের সময় দেখা দরকার, শিবলিঙ্গের কোনো ক্ষতি যাতে না হয়। ওই এলাকা নিম্ন আদালতের নির্দেশে ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। তা খুলে দেওয়া হোক।

গত বৃহস্পতিবার হিন্দুদের পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছিলেন, মসজিদ চত্বরে এএসআইয়ের জরিপ জানিয়েছে, সেখানে একসময় এক মন্দির ছিল। তার কাঠামো কিছুটা অদলবদল করে তার ওপরই গড়ে তোলা হয়েছে মসজিদ।

বিষ্ণুশঙ্কর জৈনর দাবি, ওই জরিপে দেখা গেছে, মন্দিরের থাম ও প্লাস্টার মসজিদ তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়েছিল। সেই প্রাচীন মন্দিরের কাঠামোয় ৩৪টি লিপির সন্ধান পাওয়া গেছে, যেগুলো দেবনগরী, তেলেগু, কন্নড় প্রভৃতি ভাষায় লেখা।

হিন্দু পক্ষের দাবি, ১৬৬৯ সালের ২ নভেম্বর মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব ওই মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণের ফরমান জারি করেছিলেন। শিলালিপিতে সেই ফরমানের নিদর্শন পাওয়া গেছে। জরিপে তা প্রমাণিত।

আরও পড়ুন

এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষ্ণুশঙ্কর জৈনর দাবি, সিল করে রাখা ‘শিবলিঙ্গ’ (ফোয়ারা) খুলে দেওয়া হোক। শিবলিঙ্গের জরিপেরও অনুমতি দেওয়া হোক।

জ্ঞানবাপি মসজিদ ও কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একটি দেয়াল অভিন্ন। সেই দেয়ালে হিন্দু দেব–দেবীর মূর্তি রয়েছে। দুই পক্ষের সম্মতিতে সেই বিগ্রহের বাৎসরিক পূজাও হয়। হিন্দু পক্ষের দাবি বিগ্রহের নিত্য পূজা–অর্চনার। তা নিয়ে একাধিক মামলা চলছে। নিম্ন আদালতের দেওয়া জরিপের নির্দেশ সেই মামলাতেই। হিন্দু পক্ষ ‘শিবলিঙ্গের’ (ফোয়ারা) পূজা করারও অনুমতি চেয়েছে।

আরও পড়ুন

অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের পর হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, জ্ঞানবাপি মসজিদ মুসলমানরা অন্যত্র সরিয়ে নিক। কাশী বিশ্বনাথ মন্দির মুক্ত হোক। মথুরাতেও একই দাবিতে তারা সরব। সেখানে শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান লাগোয়া শাহি ঈদগাহ মসজিদ রয়েছে। তা নিয়েও মামলা চলছে।