ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে খবরের ওপর খবরদারির নতুন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়—এমন যেকোনো ‘নেতিবাচক’ খবর প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তাদের সময় নষ্ট না করে তদন্ত শুরু করতে হবে।
যদি দেখা যায়, প্রকাশিত খবরে তথ্য বিকৃত করা হয়েছে অথবা মিথ্যা তথ্য পেশ করা হয়েছে, তাহলে ওই গণমাধ্যমের কাছে এর ব্যাখ্যা চাইতে হবে।
স্বাধীনতা দিবসের পরের দিন জারি করা ওই সরকারি নির্দেশ রাজ্যের প্রতিটি জেলা ও মহকুমায় সরকারি কর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে উত্তর প্রদেশে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বিরোধী নেতা ও সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেছেন, সংবাদপত্র ও গণমাধ্যম তো বটেই, এই নির্দেশের উদ্দেশ্য গণতন্ত্রেরও কণ্ঠ রোধ করা। আজ সাংবাদিকদের লেখা বন্ধ করা হচ্ছে, আগামী দিনে কথাও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
রাজ্যের সর্বস্তরীয় কর্তাদের এই বার্তাও দেওয়া হয়েছে, সরকারপন্থী গণমাধ্যমে ভাবমূর্তি নষ্টের কোনো সংবাদ প্রকাশিত হলে সেটা যেন তদন্তের আওতায় না আনা হয়। অন্যদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রথমে নেতিবাচক খবর চিহ্নিত করতে হবে। তারপর তার জবাবদিহি চাইতে হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তা উঁচু মহলকে জানাতে হবে।
গণমাধ্যমের আশঙ্কা, এভাবে সমালোচনার দরজা বন্ধ করে রাজ্য সরকার প্রচারের রাশ টেনে ধরতে চাইছে। বন্ধু নয়, এমন প্রচারমাধ্যমের ক্ষেত্রে সরকারি সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মুখ্যসচিব সঞ্জয় প্রসাদ ১৬ আগস্ট এই নির্দেশনামা তৈরি করে বিভিন্ন মহলে পাঠিয়েছেন। সেই অনুযায়ী, বিকৃত সংবাদ বা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে—এমন কোনো খবর প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত হলে এবং তা দৃষ্টিগোচর হলে জেলা প্রশাসককে প্রথমেই একটা চিঠি পাঠাতে হবে। সেই চিঠির এক প্রতিলিপি রাজ্য সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়কেও দিতে হবে।
সংবাদমাধ্যমের ধারণা, চিঠির প্রতিলিপি পাঠানোর উদ্দেশ্য সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র ও বিজ্ঞাপনে রাশ টানা। সরকার চাইছে নেতিবাচক সব ধরনের প্রচারে লাগাম পরাতে।
কোনো কোনো গণমাধ্যম বিস্তারিত তথ্যের বিষয়ে রাজ্য সরকারের মুখ্য সচিবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তিনি কথা বলতে অস্বীকার করেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর অভিযোগ।