কঙ্গনাকে থাপ্পড় মারা নারী জওয়ানের জন্য লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনের একাংশের স্ক্রিনশট

চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কঙ্গনা রনৌতকে থাপ্পড় মারা ভারতের কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর (সিআইএসএফ) সদস্যের জন্য এক লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছেন পাঞ্জাবের এক ব্যবসায়ী। কুরবিন্দর কাউর নামে ওই নারী নিরাপত্তারক্ষীকে অভিবাদন জানিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন শিবরাজ সিং বেইনস নামের এই ব্যবসায়ী। ভিডিওতে তিনি পাঞ্জাবের জনগণ ও পাঞ্জাবের সংস্কৃতি রক্ষার জন্য কুলবিন্দরকে অভিবাদন জানিয়েছেন।

বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌত এবার ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির প্রার্থী হিসেবে হিমাচল প্রদেশের মান্ডি আসন থেকে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দুই দিন পর বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লি আসার পথে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে অনাকাঙ্ক্ষিত ওই পরিস্থিতির মুখোমুখি হন কঙ্গনা।

কী ঘটেছিল বিমানবন্দরে?

এই খবর প্রকাশের পর গতকালই কঙ্গনা বলেছেন, তিনি সংবাদমাধ্যম ও শুভানুধ্যায়ীদের অনেকের কাছ থেকে প্রচুর ফোন পাচ্ছেন। ওই কনস্টেবল এক পাশ থেকে তাঁর দিকে এগিয়ে জানিয়ে কঙ্গনা বলেন, ‘তিনি আমার মুখে আঘাত করেন এবং আমাকে নিপীড়ন করতে শুরু করেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম তিনি কেন এটা করছেন। তখন তিনি (নারী নিরাপত্তারক্ষী) বললেন যে তিনি কৃষক আন্দোলন সমর্থন করেন।’
একটি ভিডিও বার্তায় কঙ্গনা আরও বলেন, ‘আমি নিরাপদ আছি। কিন্তু আমি উদ্বিগ্ন যে পাঞ্জাবে সন্ত্রাস বাড়ছে...কীভাবে আমরা এটা সামলাব?’

কনস্টেবল কুলবিন্দর কী বললেন?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ক্ষুব্ধ কুলবিন্দর কাউর উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন। ধারণা করা যায়, ঘটনাটির পর তিনি এ কথা বলেন। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘কঙ্গনা বলেছিলেন যে কৃষকেরা দিল্লিতে বিক্ষোভ করছেন; কারণ, তাঁদের ১০০ বা ২০০ রুপি করে দেওয়া হয়েছিল। সেই বিক্ষোভকারীদের একজন ছিলেন আমার মা।’
কৃষক আন্দোলন নিয়ে কঙ্গনা রনৌতের অবস্থানের কারণে তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন কনস্টেবল কুলবিন্দর কাউর। ঘটনাটির পর তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের হয়েছে। বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করা সিআইএসএফ এ ঘটনা তদন্তেরও পদক্ষেপ নিয়েছে।

কুলবিন্দরের বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে তাঁর পক্ষে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন এই নিরাপত্তাকর্মীর ভাই শের সিং মহীভাল। যিনি নিজে কৃষক আন্দোলনের একজন সংগঠক। একটি ভিডিওতে তিনি বলেছেন, ‘সংবাদমাধ্যমের খবরে আমি চণ্ডীগড় বিমানবন্দরের ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আমি এখন বুঝতে পেরেছি যে ঘটনাটি ঘটেছে কঙ্গনার মুঠোফোন ও পার্স তল্লাশির সময়ে। কঙ্গনা বলেছিলেন যে কৃষক বিক্ষোভের সময় নারীরা সেখানে গেছেন ১০০ রুপির জন্য। এই তর্কাতর্কির মধ্যে আমার বোনের ক্ষুব্ধ হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেটা থেকেই ঘটনাটি ঘটেছে।’

সেনা ও কৃষক—উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রতিদিন তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করছেন উল্লেখ করে শের সিং মহীভাল বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা তাঁকে সর্বাত্মক সমর্থন করছি।’

সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শের সিং মহীভাল একজন কৃষকনেতা। তিনি পাঞ্জাবের কাপুরথালা শহরের কিষান মজদুর সংহর্ষ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।