এবার ‘কাবুলিওয়ালা’ হয়ে বিজেপির পক্ষে প্রচার চালাবেন বলিউড তারকা মিঠুন

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জলপাইগুড়িতে বিজেপি প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে মিঠুন চক্রবর্তী। ১৪ এপ্রিলছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে ২০২১ সালের নির্বাচনে প্রচারের ময়দানে আলোচনায় আসা বলিউড তারকা মিঠুন চক্রবর্তী এবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে মাঠে নেমেছেন। গতকাল রোববার তিনি পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে প্রথম লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নামলেন।

১৯ এপ্রিল লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বে এই রাজ্যে তিনটি আসনে ভোট হবে। আসন তিনটি হলো জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার। গতকাল তিনি জলপাইগুড়ির বিজেপি প্রার্থী জয়ন্ত রায়ের পক্ষে প্রচারে চালান। হুডখোলা গাড়িতে ময়নাগুড়ির চার কিলোমিটার পথজুড়ে তাঁর পক্ষে ভোট চান।

মিঠুন বললেন, এবার প্রচার হবে ‘কাবুলিওয়ালা’ নিয়ে। মিঠুন সর্বশেষ ছবি করেন ‘কাবুলিওয়ালা’।

পরিচালক ছিলেন সুমন ঘোষ। সেই ছবির ধাঁচে এবার প্রচার চালাবেন মিঠুন। আর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘এমএলএ ফাটাকেস্ট’ ছবির ধাঁচে প্রচার চালিয়েছিলেন তিনি।

মিঠুন চক্রবর্তী রাজ্যের সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২০২১ সালের ৭ মার্চ কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজেপির জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।

এখন মিঠুন বিজেপির রাজ্য কোর কমিটির অন্যতম সদস্য।

সেদিন জনসভায় মিঠুন বলেছিলেন, ‘আজকের দিনটা আমার কাছে একটা স্বপ্নের দিন। আমি ছোটবেলা থেকে গরিবদের কল্যাণের জন্য ভাবতাম। দেশের জন্য কাজ করার কথা ভাবতাম। এবার সেই স্বপ্ন সফল হতে চলেছে। তাই আমি আমার সেই স্বপ্নকে সফল হতে দেখতে পাচ্ছি।’

মিঠুন বলেছিলেন, ‘স্বপ্ন তো শুধু দেখার জন্য আসে না; সফল হওয়ার জন্যও আসে। মোদির সঙ্গে একসঙ্গে মঞ্চে থাকব, এটা তো আমার কাছে স্বপ্ন বটে। তাই আজ আমি গর্বিত। আমার হৃদয় দিয়ে দেখা স্বপ্ন হয়তো সফল হতে চলেছে।’

সেই সমাবেশে মিঠুনকে দর্শকেরা ‘এমএলএ ফাটাকেস্ট’ সিনেমায় তাঁর একটি ঐতিহাসিক সংলাপ শোনানোর আবদার করেন। মিঠুন শুনিয়ে দেন, ‘মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে।’

গতকাল সমাবেশে মিঠুন বলেন, ‘এবার আমি নতুন আরেকটি সংলাপ দেব, “আমি জলঢোঁড়া নই, বেলেবোড়াও নই, আমি জাত গোখরো, এক ছোবলেই ছবি।”’ প্রচারে অংশ নেওয়া মানুষ সেই সংলাপ শুনতে চাইলে মিঠুন বলেন, ‘এবার আমি কাবুলিওয়ালা হয়ে প্রচার করব।’

মিঠুন চক্রবর্তী অবশ্য মমতার আমন্ত্রণে রাজ্যসভার সংসদ সদস্যও হয়েছিলেন। তিনি তৃণমূলের সংসদ সদস্য হয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ২০১৪ সালের ৩ এপ্রিল থেকে ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

তাঁকে ওই সময় সারদা গোষ্ঠীর ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ করা হয়। সে জন্য তাঁকে পারিশ্রমিকও দেওয়া হয়েছিল। পরে সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি জানাজানি হলে নাম জড়ায় মিঠুনেরও।

পরে অবশ্য মিঠুন চক্রবর্তী সারদার কাছ থেকে নেওয়া তাঁর পেশাগত পারিশ্রমিকের অর্থ ফিরিয়ে দেন সারদার তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির হাতে। ইডি থেকে মুক্তি পাওয়ার পর মিঠুন ছেড়ে দেন তৃণমূল কংগ্রেস। ছাড়েন রাজ্যসভার সদস্যপদও। এমনকি রাজনীতিও। ওই ঘটনার পর তিনি কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইয়ে চলে যান। এরপর বিজেপিতে যোগ দিয়ে তিনি আবার ফিরে আসেন এই বাংলায়।