জমি ইজারার কথা অস্বীকার করে অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি বিশ্বভারতীর

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন
ছবিটি টুইটার থেকে নেওয়া

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের জমি নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। গতকাল রোববার বিশ্বভারতীর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অমর্ত্য সেনের বাবা অধ্যাপক আশুতোষ সেনকে কোনো জমি দেওয়া হয়নি। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রকাশিত নথি বলছে ভিন্ন কথা।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রকাশিত নথিতে বলা হয়েছে, অমর্ত্য সেনের বাবা আশুতোষ সেনের নামে তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়ির জমি ইজারা হিসাবে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে অমর্ত্য সেনের প্রতি আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, অন্যথায় তারা মামলার পথে হাঁটবেন।

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বলছে, ১৯৪৩ সালে বিশ্বভারতী ও আশুতোষ সেনের মধ্যে স্বাক্ষরিত ইজারার নিবন্ধিত দলিল ও ২০০৬ সালে কর্মসমিতির সিদ্ধান্ত থেকে স্পষ্ট, আশুতোষ সেন বা অমর্ত্য সেনকে ১ দশমিক ৩৮ একর জমি তো দূর, বিশ্বভারতীর কোনো জমিরই মালিকানা দেওয়া হয়নি।

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অমর্ত্য সেনকে আলোচনার বার্তা দিয়ে বলেছে, আলোচনায় না বসলে একমাত্র মামলার রাস্তা খোলা রয়েছে। ‘তাঁর আত্মগরিমা ও বিশ্বভারতীর সুনাম’ রক্ষার জন্য যা করা দরকার, তা করতে অধ্যাপক সেনকে অনুরোধ করা হচ্ছে।

তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে একটি নথি প্রকাশ করে দেখানো হয়েছে, অধ্যাপক সেনের বাবা আশুতোষ সেনের নামে অতীতে ১ দশমিক ৩৮ একর জমি ইজারা দেওয়া হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই তথ্য বিশ্বভারতীর বক্তব্য খারিজ করে দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও অধ্যাপক সেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বলেছেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে অযথা হেনস্থার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আজ সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম জেলা সফরে গেছেন। তিনি সেখানে অমর্ত্য সেনের সঙ্গে তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়িতে দেখা করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।

অমর্ত্য সেনের ঘনিষ্ঠজনেরা অভিযোগ করছেন, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরাসরি তাঁকে আক্রমণ করছে। কখনো তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আবার কখনো অনুষ্ঠানের জন্য মিলনায়তন বরাদ্দ না দিয়ে তাঁকে বা তাঁর সংস্থা ‘প্রতীচি’কে হেনস্থা করা হচ্ছে।

অমর্ত্য সেন লাগাতার বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির কাজের সমালোচনা করেছেন এবং এখনো করছেন। সরকারের সমালোচনার কারণে তাঁকে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে বলে তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা মনে করেন।