যেখানে বানরেরা জমির মালিক

প্রতীকী ছবি
সংগৃহীত

বনের বানর ঘরের দরজায় এলে অনেকেই খাবার খাওয়ায়। তাই বলে বানরের বসবাসের জন্য কেউ জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন, এমনটা শুনলে নিশ্চয়ই অবাক হবেন। এমন বিচিত্র ঘটনা ঘটেছে ভারতের একটি গ্রামে। সেখানে বানরের নামে আনুষ্ঠানিকভাবে জমি লিখে দিয়েছেন গ্রামবাসী।

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের ওসমানাবাদ জেলার উপলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। বানরের বসবাসের জন্য গ্রামটির বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে ওই গ্রামে ও এর পাশের জঙ্গলে বানরেরা দল বেঁধে বসবাস করে। বানরের দল যাতে আরও ভালোভাবে বসবাস করতে পারে, সে জন্য ওই গ্রামের পঞ্চায়েত ৩২ একর জমি দান করেছে। রীতিমতো রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে সেই জমি।

গ্রামটির পঞ্চায়েতপ্রধান বাপ্পা পাডওয়াল বলেন, গ্রামবাসীর সঙ্গে বানরগুলোর বেশ মধুর সম্পর্ক। রীতি অনুযায়ী বানরগুলোর বসবাসের জন্য জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে। তবে এই রীতি কবে কে চালু করেছিল, তা জানা যায়নি।

সাম্প্রতিক সময়ে গ্রামটিতে বানরের সংখ্যা কমে এসেছে। তবে এখনো সেখানে প্রায় ১০০ বানরের বসবাস। যেই জমিটি লিখে দেওয়া হয়েছে, সেখানে বন বিভাগের পক্ষ থেকে গাছ লাগানো হয়েছে। রয়েছে একটি পরিত্যক্ত বাড়িও। যদিও বাড়িটির বেশির ভাগ অংশ ধসে পড়েছে। তবে বাপ্পা পাডওয়ালের ভাষ্য, গাছ ও পরিত্যক্ত বাড়িটিতে বানরেরা দল বেঁধে থাকতে পারবে। ছোটাছুটি করতে পারবে।

গ্রামবাসী জানান, বন ছেড়ে বানরেরা অনেক সময় বাড়ির দরজায় এসে হাজির হয়। বিশেষ করে খিদে পেলে লোকালয়ে ওদের ভিড় দেখা যায়। তখন গ্রামের মানুষ বানরগুলোকে খাবার দেয়। খালি মুখে ফেরায় না কখনোই। এমনকি ওই গ্রামে বিয়ে কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠান থাকলে তখন বানরগুলোকে খাবার দেওয়া হয়।

বাপ্পা পাডওয়াল বলেন, ‘বিয়ের আয়োজন কিংবা উৎসবের সময় আমরা আগে বানরগুলোকে খাবার দিই, উপহার দিই। এটাই আমাদের গ্রামের রীতি। এভাবেই আমরা বানরগুলোকে সম্মান জানাই। বছরের পর বছর ধরে এমন রীতি মেনে চলা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় বানরগুলোর নামে গ্রামের ৩২ একর জমি লিখে দেওয়া হয়েছে।’