অনুপ্রবেশকারীদের হটিয়ে শরণার্থী-উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে: অমিত শাহ

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ
ফাইল ছবি

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাস্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অমিত শাহ ঘোষণা দিয়েছেন, এবার পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সরকার গঠিত হলে বাংলায় আসা মতুয়া, নমঃশূদ্র সম্প্রদায়সহ শরণার্থী ও উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর শুরু হবে এই নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া। এই লক্ষ্যে ১০০ কোটি রুপি বরাদ্দও রয়েছে। তিনি বলেছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই বাংলা থেকে অনুপ্রবেশকারীদের হটাবে।


আজ পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া–অধ্যুষিত নদীয়া জেলার তেহট্টে বিজেপি আয়োজিত এক নির্বাচনী জনসভায় এসব কথা বলেন অমিত শাহ। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে মতুয়াদের ভোটের একটি ভূমিকা রয়েছে। মতুয়াদের মধ্যে শরণার্থী ও উদ্বাস্তু রয়েছে। তাদের নাগরিকত্বের প্রশ্নটি অনেক দিন ধরেই রাজ্য ও নির্বাচনী রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।


পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নির্বাচনে কাল শনিবার পঞ্চম দফায় ভোট নেওয়া হবে রাজ্যের ছয় জেলার ৪৫টি আসনে। এই নির্বাচনী প্রচারে এ নির্বাচনকে করোনাবিধি মেনে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টও যথাযথ নির্দেশ দিয়েছেন। ষষ্ঠ দফায় ২২ এপ্রিল তেহট্টের ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। আজ সেখানকার জনসভায় অমিত বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনো দিনই মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেবেন না। ক্ষমতায় এলে এই নাগরিকত্ব দেবে বিজেপি সরকারই। অমিত শাহ বলেন, দিদি এই বাংলায় অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে পারেননি। অনুপ্রবেশকারীরা দিদির ভোটব্যাংক। এবার বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই বাংলা থেকে অনুপ্রবেশকারীদের হটাবে।
আজ মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে কথা বললেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে একটি কথাও বলেননি অমিত শাহ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ রাজ্যে সিএএ কার্যকর হতে দেবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।


অমিত শাহ আরও ঘোষণা দেন, মতুয়াদের পূণ্যভূমি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার ঠাকুরনগর। এবার বিজেপি ক্ষমতায় এসে এই ঠাকুরনগরের উন্নয়ন করবে। মন্দিরকে সাজাবে। আর ঠাকুরনগর রেলস্টেশনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হবে ‘শ্রীধাম ঠাকুরনগর রেলস্টেশন’। অমিত শাহ জোরের সঙ্গে বলেন, তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলে মতুয়ারা নাগরিকত্ব পাবে না। তাই বিজেপিকে জেতানোর জন্য তিনি মতুয়াদের প্রতি আবেদন জানান। তিনি সবাইকে ভয় না পেয়ে নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান।


অমিত শাহ বলেন, বিজেপি এই বাংলার নারীদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেবে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেবে। বাংলা থেকে সন্ত্রাস নির্মূল করবে। বাংলা থেকে হটিয়ে দেবে চাঁদাবাজ আর দুর্নীতিবাজদের। এই বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এলে মেয়েরা একেবারে কেজি থেকে পিজি পর্যন্ত বিনা খরচায় পড়াশোনার সুযোগ পাবে। সরকারি পরিবহনে নারীরা বিনা খরচে যাতায়াত করার সুযোগ পাবেন।


এদিকে আজ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও পশ্চিমবঙ্গে আসেন বিজেপির প্রচারে। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে তিনি এক জনসভায় বলেছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই বাংলা সোনার বংলা হবে। সন্ত্রাসমুক্ত বাংলা হবে। মমতা দিদির সময় শেষ হয়ে গেছে।


আবার বলিউড তারকা মিঠুন চক্রবর্তীও আজ পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে বিজেপির নির্বাচনী সভায় যোগ দিয়ে বলেছেন, বাংলার মানুষ এবার ঠিক করে ফেলেছে, তারা পরিবর্তন চায়। পরিবর্তন চায় বাংলার বর্তমান সরকারের। চায় সোনার বাংলা গড়তে।


অন্যদিকে মমতাও আজ হুইলচেয়ারে বসে প্রচারে নামেন। তিনি উত্তর চব্বিশ পরগনার হাবড়ায় এক জনসভায় বলেছেন, ‘আমার সঙ্গে লড়তে না পেরে এবার বিজেপি এই বাংলায় বহিরাগত এনে কোভিড ছড়াচ্ছে। ওদের অন্য রাজ্যের নেতারা এসে এই বাংলায় ছড়াতে শুরু করেছে কোভিড। এই বাংলার মানুষ এবার কড়া জবাব দেবে বিজেপিকে।’