আত্মগোপন থেকে প্রকাশ্যে বিমল, মমতার প্রতি আনুগত্য

বিমল গুরুং
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

তিন বছর আত্মগোপনে থাকার পর হুট করে প্রকাশ্যে এলেন দার্জিলিংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার একাংশের নেতা বিমল গুরুং।

বিমল গুরুং গতকাল বুধবার কলকাতায় সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে ঘোষণা দেন, তিনি বিজেপির সঙ্গ ছেড়েছেন। ছেড়েছেন বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। আর এখন তাঁর সমর্থন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি।

বিমল গুরুং বলেন, তিনি চান মমতা ফের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হোন। কারণ, তিনি কথা দিয়ে কথা রাখেন। মমতার দল যাতে ২০২১ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের সব কটি আসন পান, সে জন্য তিনি তাঁর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবেন।

বিমল গুরুংয়ের এই নতুন অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন মমতা। তিনি এক টুইটে বলেছেন, বিমল গুরুংয়ের শান্তির প্রতি অঙ্গীকার ও এনডিএ থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে তৃণমূল কংগ্রেস স্বাগত জানায়।

বিমল গুরুং বিজেপির সমর্থনে ২০১৭ সালের ১২ জুন থেকে দার্জিলিংকে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য ঘোষণার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের বনধ শুরু করেন। সেই বনধ ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত একটানা ৮০ দিন চলে। বনধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে গোটা দার্জিলিং।

২০১৭ সালের অক্টোবরে বিমল গুরুং আত্মগোপনে যান। তাঁর সঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরিসহ অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা আত্মগোপনে যান।

বনধ ও হিংসার জেরে দায়ের হওয়া একাধিক মামলা মাথায় নিয়ে বিমল গুরুং আত্মগোপনে বসে আন্দোলন চালিয়ে যান।

তখন মমতা ঘোষণা দেন, তিনি কোনোভাবেই পশ্চিমবঙ্গ ভেঙে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি মেনে নেবেন না।

পরে রাজনৈতিক মাঠে নেমে বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ভেঙে দুই টুকরো করে দেন মমতা।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিমল গুরুং বিজেপির পক্ষ নিয়ে দার্জিলিং আসনে বিজেপির প্রার্থী রাজু বিস্তকে জিতিয়ে আনেন।

তবে বিমল গুরুং ৬ বছর ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত থেকেও আদায় করতে পারেনি পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি।

এ অবস্থায় আত্মগোপনের জীবন থেকে মুক্তি পেতে বিমল গুরুং শরণাপন্ন হন মুখ্যমন্ত্রী মমতার। শেষ পর্যন্ত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে বিমল গুরুং তাঁর আনুগত্য প্রকাশ করলেন মমতার প্রতি।

যদিও বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে এখনো দেশদ্রোহিতা, খুনসহ বেশকটি ফৌজদারি মামলা ঝুলছে।