আবারও সিবিআইয়ের জেরা এড়ালেন অনুব্রত

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের নাম উঠে এসেছে সীমান্তের গরু পাচার মামলায়। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই) এখন ওই মামলার তদন্ত করছে। অনুব্রতকে নোটিশ দিয়ে কলকাতার সিবিআই দপ্তরে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু অনুব্রত চারবার কোনো জবাব না নিয়ে অনুপস্থিত থাকেন অসুস্থতা ও অন্যান্য কারণ দেখিয়ে।

আজ বুধবার পঞ্চমবারের মতো অনুব্রতকে ডেকেছিল সিবিআই। কিন্তু তিনি যথারীতি হাজিরার জন্য গতকাল কলকাতার উদ্দেশে এলেও সকাল থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন ‘শ্বাসকষ্ট’ নিয়ে। সকালে তাঁর সিবিআই দপ্তরে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি সেখানে না গিয়ে যান কলকাতার পিজি হাসপাতালের উডবার্ন ব্লকের ২১১ নম্বর কেবিনে। সেখানে তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠন করা হয়েছে আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। এখন তাঁর শারীরিক পরীক্ষা–নিরীক্ষা চলছে।

বেফাঁস মন্তব্যের জন্য অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্টর জুড়ি নেই রাজ্যজুড়ে। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি।

আজ দুপুরে অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা সিবিআই দপ্তরে গিয়ে জানান, অনুব্রতর প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। এরপরই তাঁকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অনুব্রতর আইনজীবী আরও বলেছেন, সিবিআইয়ের সঙ্গে কথা বলতে অনুব্রত প্রস্তুত আছেন। সিবিআই চাইলে অনুব্রতকে জেরা করতে পিজি হাসপাতালে যেতে পারে। অন্যদিকে সিবিআই বলেছে, তারা এখনো হাসপাতাল থেকে কোনো চিঠি পায়নি। চিঠি পাওয়ার পর সিবিআই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

সিবিআইয়ের দপ্তরে সাক্ষ্য দিতে গেলে গ্রেপ্তারের ভয় আছে বলেই অনুব্রত তা এড়িয়ে চলছেন বলে মনে করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের নামে যাতে সিবিআই গ্রেপ্তার করতে না পারে সেই নিশ্চয়তা চেয়ে এর আগে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন অনুব্রত। হাইকোর্ট তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেন।

এরপর অনুব্রত ফের সেই রক্ষাকবচের আবেদন করেন কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই আবেদনের শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে। ডিভিশন বেঞ্চও শুনানির পর খারিজ করে দেন অনুব্রতের রক্ষাকবচের আবেদন। হাইকোর্ট জানিয়ে দেন, বারবার আদালতকে ঢাল হিসেব ব্যবহার করা যাবে না। কোনো তদন্তে আদালত এভাবে সিবিআইর হাত বাঁধতে পারে না। এ আদেশ পাওয়ার পর কার্যত মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন অনুব্রত।