ইলিশ ধরায় পশ্চিমবঙ্গে বাধা বৈরী আবহাওয়া

দুই মাস বন্ধ থাকার পর ১৫ জুন থেকে পশ্চিমবঙ্গের সাগরে ইলিশ ধরা শুরু হয়েছে। ইলিশ ব্যবসায়ীরা ট্রলার আর জাল নিয়ে পাড়ি জমান সমুদ্রে। পেয়েও যান প্রচুর ইলিশ। কিন্তু এর পর থেকে প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য যেভাবে ইলিশ ধরা পড়ার কথা ছিল, তা হচ্ছে না। তবে সমুদ্রও একেবারে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিচ্ছে না জেলেদের।

আজ বুধবার সকালে পশ্চিমবঙ্গের হিলসা ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অতুল দাস প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আমরা এখনো আশাবাদী, আমাদের সমুদ্রের আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে এবার প্রচুর ইলিশ মিলবে। তবে এখনো সমুদ্রে বৃষ্টি নেই, ঝড়ও নেই। অথচ ইলিশের জন্য প্রয়োজন বৃষ্টি। বৃষ্টির পানি পড়লে সমুদ্রের নিচ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়া যাবে। কারণ, ইলিশ সমুদ্রের নোনাজলে বাড়লেও বৃষ্টির পানি পেয়ে উঠে আসে সমুদ্রের ওপরে। তখনই জাল নিয়ে ইলিশকে ধরে ফেলেন ট্রলারের জেলেরা।’

অতুল দাস এ কথাও বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে গত তিন বছরে ইলিশের আকাল ছিল। এবার জেলেরা বলছেন, প্রচুর পরিমাণ ইলিশ এখন রয়েছে সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্রে। আবহাওয়া পরিবর্তন হলেও ঝাঁকে ঝাঁকে মিলবে এবার সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে ইলিশ।

তাই ১৫ জুন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর প্রথম তিন দিনেই মিলেছিল শুধু ডায়মন্ড হারবারেই ১১৩ টন ইলিশ। এ রাজ্যের অন্যান্য সমুদ্রবন্দরেও মিলেছে এ ইলিশ। তবে এ ইলিশের অধিকাংশ জাটকা ইলিশ হলেও মিলেছে বেশ কিছু বড় সাইজের ইলিশও।

অতুল দাস আজ এ কথাও বলেছেন, ওডিশার সমুদ্রে বৃষ্টি হওয়ায় সেখানকার উপকূলীয় অঞ্চলে মিলছে বেশ বড় সাইজের ইলিশ। যদিও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ থেকে প্রথম ৩ দিনে ৫০টি ট্রলারে করে ১১৩ টন ইলিশ এসেছিল ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্র পাইকারি বাজারে।

সামগ্রিকভাবে এবার এ রাজ্যে ইলিশ ধরার জন্য নিয়োজিত রয়েছে মৎস্য ধরার ১১ হাজার ট্রলার। তবে নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর প্রথম তিন দিনে মাছ ধরতে নামে আড়াই হাজার ট্রলার। মাছ ধরার অনুকূল আবহাওয়া না থাকায় আর সেভাবে অধিকাংশ ট্রলারকে নামাতে পারেননি জেলেরা সমুদ্রে। আবহাওয়া ঠিক হলেই একযোগে এ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকাংশ জেলেরাই নেমে পড়বেন সমুদ্রে ইলিশ ধরতে।