উদ্ধার করা অর্থ গুনতে দিন পার

ছবি: টুইটার থেকে

চারপাশে শুধু রুপি আর রুপি। এর মাঝে তিনটি অর্থ গোনার মেশিন। কয়েকজন মেঝেতে বসে রুপি গুনছেন মেশিনে। আর সেই রুপিগুলো গুনতে দিন পার। ঠিক এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের কানপুরে।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, উত্তর প্রদেশে পিয়ুষ জৈন নামের এক সুগন্ধি ব্যবসায়ীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। আক্ষরিক অর্থেই এই রুপির পরিমাণ বিপুল—দেড় শ কোটির বেশি।

ভারতের পরোক্ষ কর ও শুল্ক–সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের (সিবিআইসি) চেয়ারম্যান বিবেক জোহরি গতকাল শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন, সিবিআইসিয়ের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধারের ঘটনা এটি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

বার্তা সংস্থা এএনআই এই ঘটনার যেমন ভিডিও প্রকাশ করেছে, তেমনি কিছু ছবিও প্রকাশ করেছে। ছবিতে দেখা গেছে, দুটি বড় আলমারি নগদ অর্থে ভর্তি। রুপির বান্ডিলগুলো ছিল কাগজে মোড়ানো ও এর ওপর হলুদ টেপ লাগানো। প্রতিটি ছবিতে এমন ৩০টির বেশি বান্ডিল দেখা গেছে। আরেকটি ছবিতে দেখা গেছে, সিবিআইসি, প্রযুক্তি বিভাগ এবং পণ্য ও সেবা কর (জিএসটি)-সংক্রান্ত গোয়েন্দা ইউনিটের কর্মকর্তারা একটি কক্ষের মাঝখানে চাদর বিছিয়ে বসে অর্থ গুনছেন।

জিএসটি কর্মকর্তারা বলেন, পণ্য পরিবহনকারীরা ভুয়া চালান ব্যবহার করে এবং ই-ওয়ে বিল ছাড়াই পণ্য খালাসের মাধ্যমে ওই অর্থ জমান। কাল্পনিক ফার্মের নাম ব্যবহার করে ওই ভুয়া চালানগুলো তৈরি করা হয়েছে। এ চালানগুলোর প্রতিটি ৫০ হাজার রুপি মূল্যের, যা জিএসটি পরিশোধ করা ছাড়াই তৈরি হয়েছে। শুক্রবার ব্যবসায়ীর গুদামে থাকা চারটি ট্রাক থেকে এমন দুই শর বেশি চালান উদ্ধার করা হয়েছে। ওই চারটি ট্রাকও জব্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার উত্তর প্রদেশ, গুজরাট ও মুম্বাইয়ে এম–এস ত্রিমূর্তি ফ্র্যাগনেন্সেসের মালিকানাধীন বিভিন্ন কারখানায় অভিযান শুরু হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত উত্তর প্রদেশের কানপুরে শিখর ব্র্যান্ডের পান–মসলা ও সুগন্ধিযুক্ত অন্য তামাকপণ্য তৈরি করে থাকে। কানপুরে পরিবহন কোম্পানি এম–এস গণপতি রোড ক্যারিয়ারসের মালিকানাধীন কার্যালয় ও গুদামেও অভিযান চালানো হয়। এরপর ব্যবসায়ী পিয়ুষ জৈনর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়।

শুক্রবার জিএসটি বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই অভিযান চালানো হয়। এসব বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কাগজে মোড়ানো বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার হয়েছে। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার কানপুর শাখার কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ওই নগদ অর্থ গণনার কাজ শুরু হয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত এ গণনা চলতে পারে।