কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন

কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দলের সভাপতি রাহুল গান্ধী তাঁর মা ও দলীয় নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে কথা বলেছেন। নয়াদিল্লি, ভারত
ছবি: রয়টার্স

ভারতে চারটি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়েছে গত রোববার। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, তামিলনাড়ু, কেরালা ও পদুচেরির ভোটে আঞ্চলিক দলগুলো ভালো ফল করেছে। কিন্তু হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি দেশটির সবচেয়ে প্রাচীন দল কংগ্রেস। এখন প্রশ্ন উঠেছে দলটির নেতৃত্ব নিয়ে। রাহুল গান্ধী দলের প্রধানের পদে ফিরতে পারবেন কি না, তাতেও শঙ্কার চিহ্ন এঁকে দিয়েছে এই নির্বাচন।

ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলটি পেয়েছে রেকর্ড ২১৩ আসন। এই রাজ্যে জোট বেঁধে নির্বাচনে গিয়েছিল কংগ্রেস। দলটির নেতা রাহুল গান্ধী পশ্চিমবঙ্গে এসে প্রচারণা চালান। কিন্তু ফলাফল হয়েছে শূন্য। ২৯২টি আসনে প্রার্থী দিলেও একটিও জিততে পারেনি কংগ্রেস।

আসামে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও এনআরসি নিয়ে এমনিতেই তোপের মুখে ছিল বিজেপি। দলটির ভাগ্য সুতোয় ঝুলছিল। কিন্তু সেই সুযোগ নিতে পারেনি কংগ্রেস। দ্বিতীয়বারের মতো আসামের ক্ষমতায় আসছে বিজেপি।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশের আমেথির আসনে হেরে যান রাহুল গান্ধী। কিন্তু দলটির শক্ত ঘাঁটি কেরালার একটি আসনে জিতে ঠিকই পার্লামেন্টে যান তিনি। লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ২০টি আসনের মধ্যে ১৯টিতেই জিতেছিল দলটি। ফলে কংগ্রেস আশা করছিল, এবারের নির্বাচনে রাজ্যের বামপন্থী সরকারকে পরাজিত করবে তারা। কিন্তু সেটা হয়নি। রাজ্যে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (মার্ক্সিস্ট) নেতৃত্বাধীন এলডিএফ জোট জয় পেয়েছে। তামিলনাড়ুতে ডিএমকের সঙ্গে জোটে বেঁধে নির্বাচনে যাওয়া কংগ্রেস নেতারা ভালো করতে পারেননি। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পদুচেরির বিধানসভায় এত দিন সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল কংগ্রেস ও ডিএমকে জোট। এবার তারা হেরেছে। বিজেপি জোট যাচ্ছে ক্ষমতায়।

গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর দলের সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাহুল গান্ধী। সেই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মা সোনিয়া গান্ধী। কিন্তু দলের গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্তে বিশেষ ভূমিকা রাখেন রাহুল। পাঁচ বিধানসভার ভোটে খারাপ ফলের পর রাহুলের নেতৃত্বে ফেরা নিয়ে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই ব্যর্থতা নিঃসন্দেহে দলের সংস্কারপন্থী ২৩ নেতাকে অতিরিক্ত রসদ জোগাবে।