করোনার প্রকোপ কমলে সিএএর কোপ, ইঙ্গিত বিজেপি সভাপতির

ভারতের নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে কলকাতায় গত বছরের ডিসেম্বরে আয়োজিত বিজেপির মিছিলে নেতৃত্ব দেন দলটির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা
রয়টার্স ফাইল ছবি

ভারতে করোনার প্রকোপ কমলেই কার্যকর হবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এ ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল সোমবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বিজেপি আয়োজিত এক সভায় এ ঘোষণা দেন নাড্ডা।

আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন। এই নির্বাচনের আগে সিএএ কার্যকর করার ঘোষণা দিয়ে নাড্ডা প্রকারান্তরে বাজিয়ে বিধানসভার নির্বাচনী ঢাক।

সিএএ, জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) ও জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধনের (এনপিআর) বিরোধিতায় গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে সারা ভারত। বিশেষ করে সংখ্যালঘুরা এসব আইনের কারণে বেশি নিগৃহীত হবেন বলে ভারতের বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করে আসছে। রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতার পার্ক সার্কাসসহ বিভিন্ন এলাকায় সিএএ বাতিলের দাবিতে আছড়ে পড়েছিল প্রতিবাদী আন্দোলন। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে সেই আন্দোলন ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে যায়।

গতকালের সভায় নাড্ডা বলেছেন, সিএএ পাস হয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা এ আইন কার্যকর করা। করোনার কারণে কার্যত এত দিনে পাস করা যায়নি এ আইন। এত দিন এই আইনের নিয়মাবলি তৈরি করা যায়নি। দেশে করোনার প্রকোপ কমলেই এই সিএএ কার্যকর করা হবে। তবে এদিন নাড্ডা জোর দিয়ে বলেন, এই আইন ভারতে চালু হবেই। এটা শতভাগ নিশ্চিত।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে এলে হিন্দু ভোটকে করায়ত্ত করতে ফের বিজেপি সিএএ আইন কার্যকর করার ইস্যু তুলেছে। তাই পূজার আগেই জেপি নাড্ডা উত্তরবঙ্গ সফরে এসে কার্যত সেই সিএএ–অস্ত্রে নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে দিলেন।

জেপি নাড্ডা এদিন আরও বলেছেন, ‘ভোটব্যাংকের জন্য আজ মমতা দিদি বিভাজনের রাজনীতি করছেন। মমতার শাসনে এই রাজ্যে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হওয়ার ছবি দেখছেন। তাই আপনাদের অনুরোধ, একুশের নির্বাচনে আপনারা মমতাকে পরাস্ত করে বিজেপিকে রাজ্য শাসনের সুযোগ দিন। বিজেপিই এই রাজ্যে দিতে পারবে সুশাসন।

পুনরুদ্ধার করতে পারবে গণতন্ত্র। বাস্তবায়িত করতে পারবে মোদিজির সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে। দিদি গত চার বছরে এই রাজ্যের মানুষের জন্য কিছুই করেননি।’
পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের তীব্র সমালোচনা করে নাড্ডা আরও বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস সমাজকে ভাঙার কাজ করে আর বিজেপি সমাজকে গড়ার কাজ করে। তৃণমূল গদির জন্য রাজনীতি করে আর বিজেপি সেবার জন্য রাজনীতি করে।