অর্থ পাচার মামলা: কর্ণাটক রাজ্য কংগ্রেস নেতা শিবকুমার গ্রেপ্তার

কংগ্রেস নেতা ডি কে শিবকুমার। ছবি: টুইটার
কংগ্রেস নেতা ডি কে শিবকুমার। ছবি: টুইটার

ভারতের কর্ণাটক রাজ্য কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা ডি কে শিবকুমারকে অর্থ পাচারের অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দলের সংকটের সময়ের কান্ডারি হিসেবে পরিচিত শিবকুমারকে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে দেশটির অর্থসংক্রান্ত অপরাধ দমনে নিয়োজিত বাহিনী এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

এনডিটিভি অনলাইনের খবরে বলা হয়, অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়ে চার দিন ধরে ৫৭ বছর বয়সী শিবকুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে ইডি জানিয়েছে, তদন্তে কোনো ধরনের সহযোগিতা করছিলেন না শিবকুমার। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন।

গ্রেপ্তারের পর রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে রাত কাটিয়েছেন শিবকুমার। তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সেখানে নিয়ে যায় ইডি। আজ বুধবার তাঁকে আদালতে তুলে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করবে ইডি।

এদিকে শিবকুমারের গ্রেপ্তারকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ দাবি করেছে কেন্দ্রীয় কংগ্রেস। দলটি বলেছে, ‘সরকার ব্যর্থ রাজনীতি এবং অর্থনৈতিক দুর্দশা পরিস্থিতি থেকে জনগণের দৃষ্টি সরাতে’ শিবকুমারকে গ্রেপ্তার করেছে।

শিবকুমারকে গ্রেপ্তারের অল্প কিছু পরই তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে বিজেপিকে ‘অভিনন্দন’ জানানো হয়। তিনি বলেন, ‘আমি আমার বিজেপি বন্ধুদের অভিনন্দন জানাই যে আমাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তারা তাদের অভিযানে অবশেষে সফল হতে পেরেছেন। আমার বিরুদ্ধে মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আমি বিজেপির প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষের রাজনীতির শিকার।’

আরেক টুইটে দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে শিবকুমার বলেছেন, ‘আমি অনৈতিক কিছু করিনি, তাই দলের নেতা, কর্মী, সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি, তাঁরা যেন কষ্ট না পান। ঈশ্বরের প্রতি এবং দেশের বিচার বিভাগের ওপর আমার পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে। আমি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী যে প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে আইনি ও রাজনৈতিক লড়াইয়ে জয়ী হয়ে ফিরে আসব।’

শিবকুমারের আগে তাঁর দলের নেতা সাবেক মন্ত্রী পি চিদাম্বরমকে গত মাসে নাটকীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে গ্রেপ্তার করে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। মিডিয়া প্রতিষ্ঠান আইএনএক্স মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত একটি মামলায় তিনি তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না বলে অভিযোগ করা হয়।

শিবকুমারকে গত বৃহস্পতিবার দিল্লিতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা খারিজের আবেদন কর্ণাটক হাইকোর্ট নামঞ্জুর হয়। এর পর তৎপর হয় তদন্ত সংস্থা। এর পরদিন তিনি দিল্লি রওনা দেন। তিনি বলেন, তাঁর লুকানোর কিছু নেই। ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। সোমবার পর্যন্ত তা চলে। গণেশচতুর্থী উৎসবকে সামনে রেখে আবেগাপ্লুত হয়ে শিবকুমার বলেন, ‘এবার বাবার জন্য আমি পূজা দিতে পারলাম না। ছেলেমেয়ের সঙ্গে গণেশপূজা উদ্‌যাপন করতে পারতাম। কিন্তু তারা আমাকে তা করতে দিল না।’

২০১৭ সালের আগস্ট মাসে শিবকুমারের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় দেশটির আয়কর দপ্তর। সূত্রমতে, তারা ‘হিসাববহির্ভূত’ ৩০০ কোটি রুপির বেশি সম্পদের হদিস পায়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে শিবকুমারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করে ইডি।