কলকাতায় করোনার টিকা আসতে পারে কাল

করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে একজনকে।
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম চালান কাল বৃহস্পতিবার কলকাতায় আসতে পারে। তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে কলকাতার বিমানবন্দর থেকে।

ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে বিমানবন্দরকে করোনাসংক্রান্ত কাজে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। বলা হয়েছে, ৭ ও ৮ জানুয়ারি টিকাসংক্রান্ত যাবতীয় ব্যবস্থা রাখতে হবে কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। অন্যদিকে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীও সাংবাদিকদের একই কথা বলেছেন। ফলে এখন অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে পড়েছে কলকাতায় আসছে করোনা ভ্যাকসিন।

পশ্চিমবঙ্গে কমছে করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যুহার। এরই মধ্যে করোনা নিরাময়ে দুটি টিকা অক্সফোর্ডের তৈরি কোভিশিল্ড এবং ভারতে তৈরি কো-ভ্যাক্সিন ভারত সরকার ভারতে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। আর তাতে জনমনে স্বস্তি এসেছে কিছুটা। কেন্দ্রীয় সরকার আগেই ঘোষণা দিয়েছে, শিগগিরই ভারতে শুরু হবে করোনার টিকা দেওয়ার কর্মসূচি।

গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেছিলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার করোনার দুটি টিকা কোভিশিল্ড ও কো-ভ্যাক্সিনের মানবদেহে প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে। তাই আমরা অনুমতি পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে ভারতে টিকাদান কর্মসূচি শুরুর যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।’

তবে স্বাস্থ্যসচিব নির্দিষ্ট দিনের কথা বলেননি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবের এই ঘোষণার পর মনে করা হচ্ছে, ১২ কিংবা ১৩ জানুয়ারি টিকাদান কর্মসূচি শুরু হতে পারে। ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন। তাই সেই দিন দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি শুরুর সম্ভাবনা বেশি।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিমানে করে এই করোনার টিকা প্রথম ভারতের চারটি শহরে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। এই চারটি শহর হলো কলকাতা, চেন্নাই, মুম্বাই ও দিল্লি। টিকা নির্মাতা সংস্থা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া এবং ভারত বায়োটেক এই ভ্যাকসিন পাঠিয়ে দেবে ওই চারটি শহরের সরকারি মেডিকেল স্টোরে। সেখান থেকে পৌঁছানো হবে ভারতের ৩৭টি রাজ্যে। আবার ওই সব রাজ্য থেকে এই ভ্যাকসিন পৌঁছানো হবে বিভিন্ন রাজ্যের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, যেখানে দেওয়া হবে এই টিকা। সারা দেশে ২৯ হাজার কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। এসব কোল্ড স্টোরেজে এই ভ্যাকসিন নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সুরক্ষিত রাখা হবে।

২ জানুয়ারি দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫১৭ কেন্দ্রে টিকাকরণ কর্মসূচির মহড়া (ড্রাই রান) হয়েছিল। তাতে পশ্চিমবঙ্গের তিনটি কেন্দ্র কলকাতার সল্টলেকের দত্তাবাদ, উত্তর চব্বিশ পরগনার আমতা এবং মধ্যমগ্রামেও এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে অবশ্য ভারতের আরও চার রাজ্য পাঞ্জাব, আসাম, গুজরাট ও অন্ধ্র প্রদেশে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

গতকাল মঙ্গলবার এই টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এক বৈঠক করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। এতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়সহ রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেখানে বলা হয় এই টিকা দেওয়া হবে পর্যায়ক্রমে কোভিড–যোদ্ধাদের, রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, নার্সসহ সরকারি কর্মী, শিক্ষক, পুলিশ, সেনা ও প্রবীণ নাগরিকদের।