কান্দাহার কনস্যুলেটের ভারতীয় কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে এনেছে নয়াদিল্লি

আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ মোহাম্মাদি সম্প্রতি স্বীকার করেন যে তালেবানের সঙ্গে যুদ্ধ তীব্রতর হচ্ছে
ছবি: রয়টার্স

আফগানিস্তানের কান্দাহার কনস্যুলেট থেকে সব ভারতীয় কূটনীতিক ও কর্মীকে বিশেষ উড়োজাহাজে করে দেশে ফিরিয়ে এনেছে নয়াদিল্লি। ভারত সরকারের বরাত দিয়ে গতকাল রোববার এনডিটিভি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

কান্দাহার শহরের কাছে যুদ্ধ বেড়ে যাওয়ায় ভারত সরকার এমন পদক্ষেপ নিল। আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রেক্ষাপটে তালেবান দেশটিতে তাদের নিয়ন্ত্রণ বাড়তে লড়াই জোরদার করেছে।

ভারত সরকারের সূত্র বলছে, দেশটির বিমানবাহিনীর একাধিক উড়োজাহাজে করে কান্দাহার কনস্যুলেট থেকে ভারতীয় কূটনীতিক ও কর্মী মিলিয়ে প্রায় ৫০ জনকে নয়াদিল্লিতে আনা হয়।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আফগানিস্তানে উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে নয়াদিল্লি। দূতাবাস-কনস্যুলেটে কর্মরত ভারতীয় লোকজনের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সবার আগে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, কান্দাহারে অবস্থিত ভারতের কনস্যুলেট বন্ধ করে দেওয়া হয়নি। কান্দাহার শহরের কাছে লড়াই বৃদ্ধি পাওয়ায় কনস্যুলেটে কর্মরত ভারতীয় কূটনীতিক-কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে মাত্র।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা জোরালোভাবে বলতে চায় যে আফগান পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত এটি একটি সম্পূর্ণ অস্থায়ী ব্যবস্থা। কান্দাহার কনস্যুলেটের কাজকর্ম স্থানীয় কর্মীদের মাধ্যমে অব্যাহত থাকবে।

গত মঙ্গলবার কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস জানায়, তাদের দূতাবাস বন্ধের কোনো পরিকল্পনা নেই। এ ছাড়া কান্দাহার ও মাজার-ই-শরিফের কনস্যুলেটও চালু থাকবে।
করোনা মহামারির কারণে গত বছর হেরাত ও জালালাবাদের কনস্যুলেট বন্ধ করে দেয় ভারত।

আফগানিস্তানে সফররত, অবস্থানরত ও কর্মরত ভারতের নাগরিকদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে ভারতীয় দূতাবাস। অপরিহার্য না হলে আফগানিস্তান সফর থেকে ভারতীয়দের বিরত থাকতেও বলা হয়েছে।

আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক মিশন আগামী ৩১ আগস্ট শেষ হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দিয়েছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন ইতিমধ্যে জানিয়েছে, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হওয়ার আগেই তালেবান দেশটির অনেক এলাকা দখল করে নিয়েছে। তালেবান বলছে, ৩৪টি প্রদেশের ২০০ জেলা তাদের নিয়ন্ত্রণে।

আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ মোহাম্মাদি সম্প্রতি স্বীকার করেন যে তালেবানের সঙ্গে যুদ্ধ তীব্রতর হচ্ছে। আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার হলে তালেবান আবার ক্ষমতা দখল করতে পারে—এমন আশঙ্কা জোরালো হয়ে উঠেছে।