তারকাদের মন্তব্যে ভারতের ক্ষোভ

(বাঁ থেকে) রিয়ানা, গ্রেটা থুনবার্গ ও মিনা হ্যারিস
ছবি: টুইটার

ভারতে ৭২ দিন ধরে চলে আসা কৃষক আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন স্তরের তারকারা। এই কাতারে আছেন রাজনীতিক, অধিকারকর্মী, পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী ও সংস্কৃতি অঙ্গনের ব্যক্তিরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে মঙ্গল ও বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন মার্কিন গায়িকা রিয়ানা, সুইডিশ পরিবেশবাদী কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এবং মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের বোনের মেয়ে আইনজীবী ও অধিকারকর্মী মিনা হ্যারিস। প্রতিবাদকারীদের এই কাতারে আছেন, সাবেক পর্নো তারকা মিয়া খলিফাও।

এসব তারকার মন্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্পর্শকাতর বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারকাদের হুটহাট মতামত তথ্যপূর্ণ হয় নয়, দায়িত্বশীলও নয়। মন্তব্যের আগে এ বিষয়ে সম্যক ধারণার প্রয়োজন।

মিনা হ্যারিস তাঁর টুইট বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটলের হামলার ঘটনার সঙ্গে ভারতের কৃষক আন্দোলনের একটি সামঞ্জস্যের ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন, এটি কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয় যে এক মাসের কম সময় আগে (৬ জানুয়ারি) পৃথিবীর প্রাচীনতম গণতন্ত্রকে (যুক্তরাষ্ট্র) আক্রমণ করা হয়েছে। আর বর্তমানে সর্বাধিক জনবহুল গণতন্ত্র (ভারত) আক্রমণের শিকার হচ্ছে। এটি সম্পর্কিত। কৃষক আন্দোলন দমাতে ভারতে ইন্টারনেট বন্ধ এবং আধা সামরিক বাহিনীর সহিংসতায় সবার ক্ষোভ জানানো উচিত।

টুইটারে কৃষকদের ছবি দিয়ে গ্রেটা থুনবার্গ লিখেছেন, ‘আমরা ভারতের কৃষকদের আন্দোলনে সমর্থন নিয়ে পাশে আছি।’ একই ছবি দিয়ে টুইটারে রিয়ানা মন্তব্য করেন, ‘এই নিয়ে কেন আমরা কথা বলছি না?’ কৃষক আন্দোলনের ছবি নিজ টুইট অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে মিয়া খলিফাও কৃষকদের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এর আগে যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্যরা, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও ভারতের কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে মন্তব্য করেছিলেন। তখনো ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবাদ জানিয়েছিল।

ভারতে নতুন কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের বিক্ষোভ আন্দোলন ৭২ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে বুধবার। এর মধ্যে গত ২৬ জানুয়ারি কৃষকদের ট্রাক্টর অভিযান ঘিরে দিল্লিতে তুলকালাম ঘটে যায়। এর জের হিসেবে দিল্লি সীমান্তে কৃষকদের ঘিরে ফেলা হচ্ছে। রাস্তা কেটে, কাঁটাতারের বেড়া বসিয়ে, ব্যারিকেড দিয়ে কৃষকদের এক জায়গায় আটকে রাখা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে দিল্লি অভিযান না হয়।


ভারতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আলোচনা ও বিতর্ক শেষে ভারতের সংসদ কৃষি ক্ষেত্রে এই সংস্কার এনেছে। এর ফলে বাজারের প্রসার ঘটবে। কৃষি ও কৃষকের উপকার হবে। বলা হয়েছে, দেশের একাংশের অল্প কিছু কৃষক অসন্তুষ্ট। তবু সরকার আলোচনা চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, সরকার এক–দেড় বছরের জন্য আইন রূপায়ণ স্থগিত রাখতে প্রস্তুত।

কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে আলোচনার দাবি বুধবারও সংসদের কোনো কক্ষে মানা হয়নি। সরকারের প্রস্তাব, রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাবেই কৃষক আন্দোলন তোলা যেতে পারে। বুধবার রাজ্যসভায় এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখালে আম আদমি পার্টির তিন সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন