কয়লা–কাণ্ডে এবার অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে আদালতে তলব

রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়
ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গের আলোচিত কয়লা পাচার-কাণ্ডে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। শনিবার এ সমন জারি করেন আদালত। সমন অনুযায়ী, রুজিরাকে আগামী ২০ আগস্ট কোর্টে হাজির হতে হবে। রুজিরা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইয়ের ছেলে ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী।

এর আগে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি) কয়লা-কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রুজিরাকে কয়েক দফা নোটিশ দেয়। সেই নোটিশ উপেক্ষা করায় রুজিরার বিরুদ্ধে সমন জারি করলেন আদালত।

ইডির নোটিশ উপেক্ষা প্রসঙ্গে রুজিরা বলেছিলেন, দিল্লির পরিবর্তে কলকাতার ইডি দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য কেন ডাকা হবে না? দিল্লির বদলে কলকাতার ইডি দপ্তরে হাজিরার দাবিতে রুজিরা তখন দিল্লি হাইকোর্টে মামলাও করেছিলেন। তবে হাইকোর্ট ইডির নির্দেশের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ করেননি।

একই মামলায় নোটিশ পেয়েছিলেন রুজিরার স্বামী অভিষেকও। তিনি গত ২০ এপ্রিল দিল্লিতে ইডি কার্যালয়ে ৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন।

কয়লা-কাণ্ডে দলের নেতা-কর্মীদের নাম জড়ানোয় ভীষণ ক্ষুব্ধ রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এভাবে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এজেন্সি লেলিয়ে অভিষেক, রুজিরাসহ দলের অন্য নেতাদের দমন করা যাবে না। যোগ্য জবাব পাবেন তাঁরা। মমতা আরও বলেছিলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগে’ কখনো অভিষেক, কখনো তাঁর স্ত্রীকে দিল্লিতে তলব করা হচ্ছে। এমনকি তাঁর বন্ধুদেরও ডাকা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

পশ্চিমবঙ্গের চাঞ্চল্যকর এই কয়লা-কাণ্ডে অভিষেক, রুজিরা ছাড়াও তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ৩২৩ কোটি রুপি বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ আছে, এসব অর্থ লন্ডন ও ব্যাংককের ব্যাংকে জমা করা হয়েছে। আর এই চক্রের পেছনে রয়েছে রাজ্যের একজন নামী কয়লা মাফিয়া। তিনি আবার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের একজন শীর্ষ নেতাও। এখন পালিয়ে দেশছাড়া হয়ে বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কয়লাখনি থেকে অবৈধভাবে কয়লা উত্তোলনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ আছে, রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দলের অনেকে অবৈধভাবে তোলা কয়লা বিক্রির সঙ্গে জড়িত। তাঁরা কয়লা বিক্রি বাবদ পাওয়া অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। এর পর থেকেই ঘটনাটি ‘কয়লা কেলেঙ্কারি’ নামে পরিচিতি পায়।