মোদিবিরোধী জোট গঠনে প্রথম ধাক্কা খেলেন মমতা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ফাইল ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতে ‘মোদি-রাহুলবিরোধী’ একটি শক্তিশালী জোট গঠনের প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছে মমতার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। এ জন্য ইতিমধ্যে মমতা বৈঠকও করেছেন মোদিবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। মমতার ধারণা, প্রধানমন্ত্রী মোদির জনপ্রিয়তা এখন ভারতে দ্রুত কমছে। কংগ্রেসও হারাচ্ছে মোদির বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি।

মমতার এ তৎপরতার মধ্যেই গত মঙ্গলবার গোয়ায় অঘটন ঘটে গেছে। ওই দিন বিকেলে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন গোয়ার ফরোয়ার্ড পার্টির নেতা ও গোয়ার সাবেক মন্ত্রী বিজয় সরদেশাই ও বিধায়ক বিনোদ পালিয়েনকার। বৈঠক শেষে বিজয় সারদেশাই জানিয়ে দেন, ফরোয়ার্ড পার্টি আগামী বছরে অনুষ্ঠেয় গোয়া বিধানসভার নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে থাকবে। এ ঘটনায় প্রথম ধাক্কা খান মমতা।

জানা গেছে, তৃণমূলকে শক্তিশালী করার জন্য শিগগিরই গোয়ার রাজধানী পানাজি এবং মেঘালয়ের রাজধানী শিলং সফরে যাবেন মমতা। সঙ্গে যেতে পারেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূলকে বিস্তারের জন্য ত্রিপুরার পর মমতা বেছে নেন এ গোয়া রাজ্যকে। এ রাজ্যের ৪০টি বিধানসভার নির্বাচন আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ রাজ্যে এখন ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপি।

কংগ্রেস পেয়েছিল ১৭টি আসন আর বিজেপি পেয়েছিল ১৩টি আসন। আর গোয়ার ফরোয়ার্ড পার্টি পেয়েছিল ৩টি আসন। মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি ৩টি এবং এনসিপি একটি আসনে জয়ী হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের বিধায়কদের একটি অংশ বিজেপিতে যোগ দিলে গোয়ায় সরকার গড়ে বিজেপি। এবার সেই গোয়ার রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন সমাগত।

গোয়া বিধানসভার নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছেন মমতা। তিনি গোয়ার বিজেপিবিরোধী দলের সঙ্গে জোট বাঁধার লক্ষ্য ঠিক করেছেন। মমতা এই লক্ষ্যে গোয়ার রাজনীতিতে তৃণমূলের আসন দখলের জন্য ছুটে যান গোয়ার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরোর কাছে। সেখানে তৃণমূলের সঙ্গে কথা হয় ফেলেইরোর।

ফেলেইরো রাতারাতি যোগ দেন মমতার তৃণমূল কংগ্রেসে। মমতাও ফেলেইরোকে গত মাসে গোয়ার রাজ্যসভার সাংসদ করেন। এমনকি তাঁকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহসভাপতির পদেও বসান। লুইজিনহো ফেলেইরো ১৯৯৯ সালের ৯ জুন থেকে ১৯৯৯ সালের ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত গোয়ার কংগ্রেস দলীয় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

মোদি-রাহুলবিরোধী জোট গড়ার লক্ষ্যে মমতা প্রথম টার্গেট করেন ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঙালি অধ্যুষিত ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরাকে। ইতিমধ্যে মমতা ২০২৩ সালে ত্রিপুরা বিধানসভার ৬০টি আসনে জয়ের জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন। যদিও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া ত্রিপুরা রাজ্যের পৌর নির্বাচনে বিপুল ভোটে হেরে যায় তৃণমূল। হেরে যায় আগরতলা পৌর করপোরেশনের নির্বাচনেও।