চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, জাপানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি ভারতের

ভারত ও জাপান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে চুক্তিবদ্ধ হলো। পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সরবরাহ ও পরিষেবার বহর বাড়াতে গতকাল বুধবার এ দুই দেশের মধ্যে যে চুক্তি সম্পাদিত হয়, চীনের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার নিরিখে তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এ চুক্তির ফলে দুই দেশের প্রতিরক্ষা বহরের মধ্যে বহুমুখী সহযোগিতা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই আঞ্চলিক নিরাপত্তাও দৃঢ় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতের প্রতিরক্ষাসচিব অজয় কুমার ও জাপানের রাষ্ট্রদূত সাতোশি সুজুকি এ ‘অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস সার্ভিসিং’ চুক্তিতে সই করেন। চুক্তিটি আগামী ১০ বছরের জন্য বলবৎ থাকবে। আজ বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে এক বিবৃতিতে এ খবর জানায়। এ চুক্তির ফলে যৌথ মহড়া, শিক্ষণশিবির, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন, ত্রাণকাজ, বিপর্যয় মোকাবিলা অথবা তৃতীয় দেশ থেকে নাগরিকদের উদ্ধার করাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে দুই দেশের বাহিনী একে অন্যের সরবরাহ ও পরিষেবায় সহযোগিতার হাত বাড়াতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, ওমান ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ভারতের এ চুক্তি রয়েছে। খাদ্য, পানীয়, পরিবহন, পোশাক, চিকিৎসা ছাড়াও এ পরিষেবার অন্তর্গত থাকছে যন্ত্রাংশের মেরামতি ও রক্ষণাবেক্ষণ।

চুক্তি সম্পাদনের পরদিন আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফোনে কথা বলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে। দুই নেতাই এ চুক্তিকে স্বাগত জানান এবং বলেন, দুই দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সহযোগিতা এর ফলে বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। আগে ঠিক ছিল, দুই নেতার বৈঠকে এ চুক্তি সই হবে। কোভিড পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হয়নি।

স্বাস্থ্যের কারণে প্রধানমন্ত্রী আবে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন। জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, ৩০ মিনিটের ফোনালাপে দুই প্রধানমন্ত্রীই পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছেন। বলা হয়েছে, জাপানের নেতৃত্ব বদল দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে হেরফের ঘটাবে না।

পূর্ব লাদাখে সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে ভারত–জাপানের এ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ফ্রান্স থেকে আসা অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমানও আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় বিমানবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হলো। অত্যাধুনিক অস্ত্রসম্ভারে সজ্জিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকেই তা কাজে নামছে। অন্তর্ভুক্তি অনুষ্ঠানের আগে রীতি অনুযায়ী সর্বধর্ম প্রার্থনা হয়। তারপর হয় এয়ার শো। রাফাল ছাড়া তাতে অংশ নেয় সুখোই–৩০, জাগুয়ার, তেজস, এম আই–১৭ ও ধ্রুব হেলিকপ্টার। অনুষ্ঠানে যোগ দেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্লোরেন্স পার্লে, প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আর কে এস ভাদৌরিয়া, প্রতিরক্ষাসচিব অজয় কুমার, ফ্রান্সের বিমানবাহিনীর উপপ্রধান এরিক অ্যাটলে ও রাফাল নির্মাণ সংস্থা দাসো এভিয়েশনের প্রতিনিধিরা।