ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে যারা সোচ্চার, তাঁদের বিরুদ্ধেই মামলা

শ্যাম মীরা সিং নামের এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধেও মামলা দেওয়া হয়েছে
ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

ত্রিপুরায় সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে যাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোচ্চার হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে বিজেপি–শাসিত এই রাজ্যের পুলিশ। এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইন আনলফুল অ্যাকটিভিটিজ (প্রিভেনশন) অ্যাক্টে (ইউএপিএ) মামলা দেওয়া হয়েছে। সামাজিক মাধ্যম টুইটারের ১০২টি অ্যকাউন্টধারীর বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়েছে।

ত্রিপুরা পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক জ্যোতিস্মান দাস চৌধুরী বলেছেন, এসব অ্যাকাউন্ট যাঁদের, তাঁদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এই অ্যাকাউন্টগুলো থেকে সহিংসতায় মদদ দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের অভিযোগ।

গত অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে এক সপ্তাহ ধরে চলা সহিংসতায় বহু মানুষ তাঁদের ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, বেশ কিছু মসজিদে হামলা চালানো হয়েছে।

ইউএপিএতে যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, তাঁদের একজন সাংবাদিক শ্যাম মীরা সিং। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাত্র তিনটি শব্দ, “ত্রিপুরায় আগুন জ্বলছে” লেখার জন্য বিজেপি–শাসিত ত্রিপুরা সরকার আমার বিরুদ্ধে ইউএপিএতে মামলা করেছে।

সুবিচারের জন্য সব সময় কথা বলব। দেশের প্রধানমন্ত্রী কাপুরুষ হলেও সাংবাদিকেরা নন।’ শ্যাম সিং ছড়াও বিভিন্ন পেশার বেশ কিছু ব্যক্তি, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধেও বিশেষ সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষে ত্রিপুরার সহিংসতা নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন, এমন দুজন আইনজীবীর বিরুদ্ধেও ইউএপিএতে মামলা দেওয়া হয়েছে। এঁরা হলেন আনসার ইন্ডোরি ও মুকেশ কুমার নামে দিল্লির দুই আইনজীবী।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ত্রিপুরায় বেছে বেছে তাঁদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, যাঁরা এই সহিংসতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এবং বিজেপি শাসনাধীন ত্রিপুরা সরকারকে দোষারোপ করেছেন। অথচ যাঁরা সক্রিয়ভাবে সহিংসতায় অংশ নিয়েছে, তাদের ধরা হচ্ছে না বলে মানবাধিকার সংগঠন, সাংবাদিক ও আইনজীবীদের একাংশ জানিয়েছেন।