দিদিকে ক্ষমা করবে না সিঙ্গুরবাসী: বিজেপি

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ফাইল ছবি

পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সিঙ্গুরে গতকাল বৃহস্পতিবার শিল্পপার্ক গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ভারতীয় জনতা পার্টির  (বিজেপি) নেতা শমীক ভট্টাচার্য আর সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, এবার আর সিঙ্গুরবাসী দিদিকে ক্ষমা করবে না। জবাব দেবে। এর পাল্টা জবাবে মমতা বলেছেন, বিজেপি ওই সব দিবাস্বপ্ন আঁকড়ে থাকুক।

মমতা গতকাল বৃহস্পতিবার কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এবার সিঙ্গুরে শিল্পপার্ক গড়ে তোলা হবে। শিল্পপতিরা সেখানে অ্যাগ্রো শিল্প গড়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাঁদের জমিও দেওয়া হবে। মমতার এমন সিদ্ধান্তে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের মানুষ। তাঁরা বলছেন, যে মমতা এই সিঙ্গুরে শিল্পকারখানা গড়ার বিরুদ্ধে ছিলেন, তিনি কেন এবার শিল্প গড়ার কথা বললেন?

বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য এবং লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, সিঙ্গুর থেকে টাটাদের তাড়িয়ে বাংলার শিল্প সম্ভাবনাকে খুন করেছেন দিদিমণি। সিঙ্গুর তাই দিদিমণিকে আর ক্ষমা করবে না।

সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। তিনি সিঙ্গুরের স্থানীয় কয়েকজন নেতার পদত্যাগ দাবি করেছেন।

নন্দীগ্রামের আন্দোলনের কেন্দ্রে থাকা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করে গতকাল তাঁর নিজের এলাকা পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে এক বিশাল রোড শো এবং জনসভা করেছেন। তিনি অবিভক্ত মেদিনীপুরের ৩৫ আসনেই এবার বিজেপি জিতবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তবে মমতার দল ঘোষণা দিয়েছে, শুভেন্দু তাদের কোনো ফ্যাক্টর নয়। মেদিনীপুরে তৃণমূলই জিতবে।

২০০৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সিঙ্গুরে সস্তায় মোটরগাড়ির কারখানা গড়ার জন্য তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার টাটাকে ৯৯৭ একর জমি লিজে দিয়েছিল। তখন বিরোধী দলের নেতা মমতা এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু করেন। পরে টাটা গাড়ি কারখানা নির্মাণকাজ বন্ধ করে গুজরাটের সানন্দে চলে যায়।

একই সময় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে রসায়ন শিল্প এলাকা গড়ার জন্য বামফ্রন্ট সরকার ১৪ হাজার একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তুতি নেয়। এর বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেন সে সময়ের বিরোধী নেতা মমতা।

সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রামের আন্দোলনে জনপ্রিয়তা অর্জন করে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসেন মমতা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিঙ্গুরের জমি কৃষকদের ফিরিয়ে দেন। তবে টাটার গাড়ি কারখানার জেরে অনুর্বর জমি চাষ করতে পারেননি কৃষকেরা।