দেউলিয়া ঘোষণা করা অনিল আম্বানির বিদেশে গোপন ১৮ কোম্পানি

অনিল আম্বানি।
ছবি: রয়টার্স

ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানির ভাই অনিল আম্বানি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে লন্ডনের এক আদালতে শুনানির সময় দাবি করেন, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ এখন ‘নেট জিরো’, অর্থাৎ শূন্যে নেমে এসেছে। সঞ্চিত অলংকার বেচে এখন তাঁকে আইনজীবীর বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। তিনটি চীনা ব্যাংকের দায়ের করা এক মামলায় ওই শুনানি হচ্ছিল।

সে সময় আদালত তাঁর পর্যবেক্ষণে দেখেছিলেন যে আম্বানির অফশোর স্বার্থ রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। তবে সে বিষয়ে কোনো কিছু জানাননি আম্বানি। তিন মাস পর তাঁকে ব্যাংকে ৭১ কোটি ৬০ লাখ ডলার প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি তা করেননি এবং বিদেশে কোনো সম্পদ থাকার কথা অস্বীকার করেন। তবে এখন প্যান্ডোরার বাক্স খুলেছে, আর তা থেকে বেরিয়ে আসছে বিশ্বের হর্তাকর্তাদের সব গোপন সম্পদ।

গতকাল রোববার ফাঁস হওয়া প্যান্ডোরা পেপারসের তথ্য অনুযায়ী, রিলায়েন্স এডিএ গ্রুপের চেয়ারম্যান অনিল আম্বানি ও তাঁর প্রতিনিধিরা জার্সি, ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ (বিভিআই) ও সাইপ্রাসে কমপক্ষে ১৮টি অফশোর কোম্পানির মালিক। ২০০৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে এগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এর মধ্যে কমপক্ষে ৭টি কোম্পানির ১৩০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ ও ঋণ রয়েছে।

জার্সিতে অনিল আম্বানির মালিকানাধীন তিনটি কোম্পানি রয়েছে। এগুলো হলো ব্যাটিস্টে আনলিমিটেড, রেডিয়াম আনলিমিটেড ও হুই ইনভেস্টমেন্ট আনলিমিটেড, যা ২০০৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০৮ সালের জানুয়ারির মধ্যে তৈরি হয়।

ব্যাটিস্টে আনলিমিটেড ও রেডিয়াম আনলিমিটেড এডিএ গ্রুপের হোল্ডিং কোম্পানি রিলায়েন্স ইনোভেঞ্চারস প্রাইভেট লিমিটেডের মালিকানাধীন। হুই ইনভেস্টমেন্ট আনলিমিটেড এএএ এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের মালিকানাধীন, যা রিলায়েন্স ক্যাপিটালের একটি প্রোমোটার কোম্পানি। ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া জার্সিতে সামারহিল লিমিটেড ও ডুলউইচ লিমিটেড নামে আরও দুটি কোম্পানির মালিক অনিল আম্বানির প্রতিনিধি অনুপ দালাল।

এই অফশোর কোম্পানি এবং লেনদেন সম্পর্কে জানতে চাইলে অনিল আম্বানির একজন আইনজীবী বলেন, ‘আমার মক্কেল ভারতের একজন করদাতা। আইন মেনে চলার জন্য তিনি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুগত। লন্ডন আদালতে তথ্য প্রকাশ করার সময় সব প্রয়োজনীয় বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল। রিলায়েন্স গ্রুপ বিশ্বব্যাপী ব্যবসা পরিচালনা করে এবং বৈধ ব্যবসা করে।’

গত বছরের মে মাসে চীনা কোম্পানির ৭১ কোটি ৬০ লাখ ডলার প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হলে আদালতে নিজেকে দেউলিয়া বলে ঘোষণা করেছেন ধীরু ভাই আম্বানির ছোট ছেলে অনিল আম্বানি।