নন্দীগ্রামের ভোট পুনর্গণনার মমতার আবেদন খারিজ

তৃতীয়বারের মতো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা, ৫ মে
ছবি: ভাস্কর মুখার্জী

তৃণমূলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নন্দীগ্রাম আসনের ভোট পুনর্গণনার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। কমিশন বলেছে, রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইচ্ছা করলে এটা নিয়ে নির্বাচনী মামলা করতে পারেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর নিজের আসন দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর ছেড়ে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম আসনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু এই নির্বাচনে তাঁর প্রতিপক্ষ তাঁরই মন্ত্রীসভার সাবেক সদস্য শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে যান। মমতা এই পরাজয় মেনে নিতে পারেননি। নন্দীগ্রাম আসনে মমতা ভোট পান ১ লাখ ৮ হাজার ৮০৮টি। আর শুভেন্দু পান ১ লাখ ১০ হাজার ৭৬৪টি। মমতা হেরে যান ১ হাজার ৯৫৬ ভোটে। আর এরপরই মমতা ভোটযন্ত্র বদলানোসহ ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনে নন্দীগ্রাম আসনের ভোট পুনর্গণনার আবেদন জানান নির্বাচন কমিশনে।

গতকাল নির্বাচন কমিশন সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেছে, নন্দীগ্রাম আসনের রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশই বহাল রাখা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসার ওই আসনে মমতাকে পরাজিত ও শুভেন্দুকে জয়ী হওয়ার সার্টিফিকেটও দেন। এরপরই মমতা ভোট পুনর্গণনার আবেদন জানান। সেই আবেদন খারিজ করে গতকাল এক নির্দেশে বলা হয়েছে, জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮০ ধারায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী মামলা করতে পারেন।

এদিকে নন্দীগ্রামে হারলেও মমতা ভারতের সংবিধান অনুযায়ী আজই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। বাংলায় শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
পশ্চিমবঙ্গের ভোটের ফলে আরেকটি বিষয় উঠে এসেছে। সেটি হলো, কলকাতা সিটি নিয়ে বিজেপির স্বপ্নভঙ্গ। বিধানসভার ফলাফল সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। সামনেই কলকাতা করপোরেশনসহ রাজ্যের ১০৫টি পৌর করপোরেশন ও পৌরসভার নির্বাচন। কলকাতা পৌরসভায় রয়েছে ১৪৪টি ওয়ার্ড। এবার বিধানসভার নির্বাচনের আলোকে এই ১৪৪ ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ১১ ওয়ার্ডে এগিয়ে আছে বিজেপি। অথচ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে বিজেপি এই ১৪৪ ওয়ার্ডের মধ্যে এগিয়ে ছিল ৫১টি ওয়ার্ডে। তখন থেকে বিজেপি স্বপ্ন দেখতে শুরু করে পৌর করপোরেশন নির্বাচনেও তাদের জয়ের পথ খুলতে পারে।