নয়াদিল্লিতে বায়ু দূষণরোধে জরুরি অবস্থা
দীপাবলির আগে দূষণ মোকাবিলায় ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে দশ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। আজ বৃহস্পতিবার থেকে ১০ নভেম্বর তারিখ পর্যন্ত এই জরুরি অবস্থা জারি থাকবে।
জরুরি অবস্থার সময় রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকায় কোনো ধরনের নির্মাণকাজে হাত দেওয়া যাবে না। করা যাবে না কোনো খোঁড়াখুঁড়ি। পাথরকুচি তৈরি বা ধুলোর সৃষ্টি হয়—এমন কিছু করা যাবে না। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশ জারি করেছে। নির্দেশ অমান্য করলে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে।
প্রতি বছর এই সময়ে দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকায় দূষণের মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। এর কারণ একাধিক। সব ধরনের নির্মাণকাজের পাশাপাশি দীপাবলি উপলক্ষে বিস্তর বাজি পোড়ানো হয়। এসবের সঙ্গে যোগ হয় গাড়ির দূষণ। বোঝার ওপর শাকের আঁটির মতো চেপে বসে হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও পশ্চিম উত্তর প্রদেশের চাষের জমিতে কেটে নেওয়া ফসলের গোড়া পুড়িয়ে দেওয়ার প্রথা। সব মিলিয়ে বাতাসে দূষণের মাত্রা সহনশীলতার চেয়ে বেড়ে যায় কয়েকগুণ বেশি। দূষণজনিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা।
এই সময়ে দিল্লি ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়ে নির্দেশিকা জারি করছে বিভিন্ন দেশ। গতকাল বুধবার রাজধানীর বাতাসের ‘কোয়ালিটি ইনডেক্স’ ছিল ৩৬৬, যা নির্ণায়ক অনুযায়ী ‘মারাত্মক’। আলোর উৎসব দীপাবলির সময় যা আরও বেড়ে যাবে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ তাই কোনো ঝুঁকি না নিয়ে দশ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নেয়।
সময়-সময় দিল্লির দূষণ চীনের রাজধানী বেইজিংকেও ছাড়িয়ে যায়। এবং সেটা শুরু হয় প্রধানত হেমন্তকালের শুরুতে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় দিল্লির বদরপুরের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে মেট্রো সহ অন্যান্য গণপরিবহনের সংখ্যা। বাজি পোড়ানোয় কড়াকড়ি করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে পরিবেশবান্ধব আতশবাজি বা ‘গ্রিন ক্র্যাকার্স’। দীপাবলির দিন রাত আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত বাজি পোড়ানোর সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বিয়ে উপলক্ষে বাজি না পোড়াতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। নির্দেশ অমান্য হলে সংশ্লিষ্ট থানার কর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা জারির হুমকি দেওয়া হয়েছে। পনেরো বছরের পুরনো গাড়ি চালানো যাবে না বলে হুকুম জারি হয়েছে। ফসলের গোড়া না জ্বালানোর জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চালানো হচ্ছে ব্যাপক প্রচার।