পশ্চিমবঙ্গে আংশিক লকডাউনের মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ল

করোনা ভাইরাস
প্রতীকী ছবি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কমে এসেছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। তবে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা এবং আসন্ন দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে এখনই তুলে নেওয়া হচ্ছে না চলমান আংশিক লকডাউন। রাজ্যটিতে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

গতকাল বুধবার পশ্চিমবঙ্গ সচিবালয় নবান্ন থেকে এক নির্দেশনায় আংশিক লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর কথা জানানো হয়। আগের ঘোষণা অনুযায়ী, লকডাউন শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর।

নবান্নের নির্দেশনায় বলা হয়, আংশিক লকডাউন চলাকালে স্থানীয় সময় রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হতে পারবে না কেউ। এ নিয়ম ভঙ্গ করলে ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, লকডাউন চলাকালে গণপরিবহন চালু থাকলেও লোকাল ট্রেন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকছে। তবে মেট্রোরেল যথারীতি করোনা নিয়ন্ত্রণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু থাকবে। প্রতিটি বাসে ‘মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ’ লেখা স্টিকার লাগাতে হবে। হাটবাজার ও শপিং মলেও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ৫০ শতাংশ আসন খালি রেখে খোলা রাখা যাবে কোচিং সেন্টারগুলো। সরকারি ও বেসরকারি অফিসও ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে চালু থাকবে। আইটি-সংশ্লিষ্ট সব অফিস পূর্ণ কর্মী নিয়ে চালু করা যাবে।

৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিস চলবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত। হাটবাজার ও কাঁচাবাজার খোলা রাখা যাবে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। অন্যান্য দোকানপাট খোলা থাকবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে শপিং মল। পারলার ও সেলুন খোলা থাকবে বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আর বার ও রেস্তোরাঁ দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আংশিক লকডাউন চলাকালে রাজ্যের সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। জিম খোলা যাবে ৫০ শতাংশ আসন নিয়ে। সিনেমা হল ও স্টেডিয়ামে ৫০ শতাংশ দর্শক আসন খালি রেখে চালু করা যাবে। টিকা নেওয়া থাকলে সকালে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের ঢুকতে দেওয়া হবে পার্কে। এ সময় চালু থাকবে হোম ডেলিভারি, অনলাইন পরিষেবা ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিষেবা। খোলা থাকবে ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর দোকান।

পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে গতকাল রাতে প্রকাশিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে ১৮টিতে করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি। বাকি ৫টি জেলায় মারা গেছেন ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে কলকাতায় মারা গেছেন দুজন।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪৩ জন। একই সময়ে করোনামুক্ত হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৭৫৩ জন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন ৮ হাজার ৫০ জন। গতকাল রাজ্যে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪০ হাজার ৫৩ জনের।

করোনা শনাক্তের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ৮৬০ জন। একই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৮ হাজার ৬১৩ জনের। আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত করোনামুক্ত হয়েছেন ১৫ লাখ ৩২ হাজার ১৯৭ জন।