পশ্চিমবঙ্গে ফের রাষ্ট্রপতির শাসন জারির দাবি বিজেপির

কলকাতার অন্যতম কনটেনমেন্ট জোন: ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কলকাতার অন্যতম কনটেনমেন্ট জোন: ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গের প্রতিদিনই মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে। সংক্রমণও থেমে নেই। রাজ্য সরকারও এই মিছিলের রাশ টানতে পারছে না। রয়েছে চিকিৎসায় নানা গাফিলতির অভিযোগ। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে শয্যার অভাব ও চিকিৎসাসেবার অভাবের অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। এতে পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ধুয়ো তুলে রাজ্যে রাষ্ট্রপতির শাসন চালুর দাবি তুলেছে বিজেপি।

গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরে বিজেপি কর্মী গৌতম পাত্রের ঝুলন্ত লাশ মেলে। গত বুধবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগরে বিজেপি নেতা পূর্ণচন্দ্র দাসের ঝুলন্ত দেহ মেলে। এই দুটি মৃত্যুকে বিজেপি ‘রহস্যজনক’ খুন বলে আখ্যা দিয়ে এই মৃত্যুর তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে। গতকাল শুক্রবার ওই এলাকার দুই সাংসদ সৌমিত্র ও নিশীথ প্রামাণিক দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এই দাবি তোলেন। তাঁরা বলেন, পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে। গণতন্ত্র বিপর্যয়ের মুখে। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। নিয়মিত খুন হয়ে যাচ্ছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। তাই তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসক দল তৃণমূলকে সরিয়ে সেখানে রাষ্ট্রপতির শাসন জারির আবেদন করেছে।

এর আগেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা ও পশ্চিমবঙ্গে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়সহ একদল বিজেপি নেতা দেখা করে উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্র নাথ রায়ের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত ও রাজ্যে রাষ্ট্রপতির শাসন জারির আবেদন করেছিলেন। দুই দফার দুই প্রতিনিধিদলই পশ্চিমবঙ্গে করোনা চিকিৎসায় গাফিলতি এবং রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার অভিযোগ তুলেছিল। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারিরও দাবি তুলেছিল। অভিযোগ করেছিল, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর এই রাজ্যে শাসক দলের হাতে ১০৫ জন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন।

করোনার সংক্রমণ বাড়ছে
করোনার সংক্রমণের লাইন এখনো দীর্ঘ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। একই সঙ্গে মৃত্যুর মিছিলও বাড়ছে। গত ১ জুন এই রাজ্যে যেখানে সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৭৭২ জন, সেখানে ১ জুলাই সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ১৯ হাজার ১৭০। ৩০ জুলাই তা আরও বেড়ে হয় ৬৭ হাজার ৬৯২ জন। আবার যেখানে ১ জুন কলকাতায় সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ১৭৯ জন, সেখানে ১ জুলাই সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৬২২ জন। ৩০ জুলাই তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার ৯৬৯ জনে।